দত্তপুকুরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। অন্তত সাতজনের মৃত্যুর খবর।অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে সেই এগরায় বিস্ফোরণকাণ্ডে কথা। অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে এগরার সেই ভানু বাগের কথা। তবে দত্তপুকুরেও ছিল সেই ভানু বাগের মতো কুচক্রীরা। যারা বাজি কারখানার আড়ালে চালাত অবৈধ কারবার। দত্তপুকুরে ছিল কেরামতি আলি, সামসুল হকরা। মৃত্যু হয়েছে সেই সামসুলের।
বিস্ফোরণকাণ্ড নিয়ে সংবাদমাধ্য়মের সামনে মুখ খুলেছেন সামসুলের ভাইপো মফিজুল। তিনি জানিয়েছেন, কেরামত আলিকে এই বাজি কারখানা তৈরির জন্য জমি ভাড়া দিয়েছিলেন সামসুল। বিস্ফোরণে কেরামতের ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে। সামসুল সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, বার বার বারণ করা হয়েছিল। ওরা শুনতেন না।
মূলত বাড়তি কিছু রোজগারের আশায় এই বাজি কারখানায় কাজ করতেন অনেকেই। কাজ করতেন মহিলারাও। লাভের মুখ দেখতে মুর্শিদাবাদের সুতি থেকে আসত দক্ষ শ্রমিকরা। মাঝেমধ্যে বিস্ফোরণ হত না এমন নয়। আহত হওয়ার ঘটনাও হয়েছে। কিন্তু ওদের কোথায় যেন লুকিয়ে ফেলত কেরামতরা। আসলে ওদের লুকিয়ে চিকিৎসা করানো হত।
স্থানীয় এক মহিলা সংবাদমাধ্য়মে জানিয়েছেন, ছাদে বাজি শুকোতে দিত। মাঝেমধ্যে তা ফেটে যেত। বার বার বারণ করা হত। এমনকী জলও ঢেলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও কথা শুনত না ওরা। বলত কিছু হলে দেখা যাবে। ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেব। এখন ক্ষতিপূরণ দে!…
বাসিন্দাদের দাবি, এর আগে কেরামতের শ্য়ালিকার মৃত্যু হয়েছিল বিস্ফোরণে। কিন্তু তারপরেও কেরামত বাজির ব্যবসা থেকে সরে আসেনি।বছরের পর বছর ধরে চলত এই ব্যবসা। কিন্তু কাদের প্রশয়ে?
এদিকে সেই বিস্ফোরণস্থলের কাছেই দেখা গিয়েছে একটি গবেষণাগারের উপস্থিতি। সেখানে একাধিক কাঁচের বিকার রয়েছে। ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ রয়েছে। কিন্তু বাজি তৈরির জন্য এই গবেষণার কী প্রয়োজন? তবে কি এর পেছনে ছিল অন্য কোনও বড় মতলব?
এদিকে বাসিন্দাদের একাংশের দাবি পুলিশ, প্রশাসন সব জানত। পুলিশ টাকা খেত। টাকাতেই মুখ বন্ধ রাখত পুলিশ। তবে জেলা পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। কারা জড়িত তা দেখা হচ্ছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই আতঙ্ক গ্রাস করেছে গোটা এলাকাকে। স্থানীয় এক ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা জানিয়েছেন, বারণ করলেও ওরা শোনেনি। পরপর চারটি বাড়ি ভেঙে গেল।