নেশা করতে বাধা পাওয়ায় ভাইয়ের হাতে খুন হতে হয়েছিল দাদাকে। খড়্গপুর পৌরসভার ৩৩ নং ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লী এলাকায় রবিবার ঘটেছিল মর্মান্তিক খুনের ঘটনা। মৃত দাদা জি নভজিৎ রাওয়ের মেজ ভাই জি. সুমন রাও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমাদের ছোট ভাই সুমিত গাঁজার নেশা করত! তা নিয়ে অশান্তি হয়েছে। সুমিতকে খুঁজতে পুলিশ বাড়িতে এসেছে। রবিবার বাড়িতে বন্ধু–বান্ধবদের নিয়ে নেশা করছিল। তখন আমি আর আমার দাদা প্রতিবাদ করি। বন্ধুদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিই। তখম সে বলছিল আমি আসছি, তোদের দেখে নেব! তারপরই মোটরবাইক নিয়ে ফিরে আসে। আমার দাদা বাড়ির উঠোনে মুরগিকে খাওয়াচ্ছিল। তখন মোটরবাইকের তীব্র গতিবেগ বাড়িয়ে দাদার পেছনে ধাক্কা মারে। দাদা ছিটকে গিয়ে রাস্তার উপর পড়ে। মাথায় আঘাত লাগে। কান দিয়ে রক্ত বেরিয়ে যায়।’
তখনই খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় নভজিৎ–কে। সন্ধ্যায় রেফার করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। রাত ৮টা নাগাদ নভজিৎ রাওয়ের (৪৫) মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ওই দিন রাতেই ঘাতক মোটরবাইক–সহ সুমিতকে আটক করে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, মাদক কারবারে বাধা দেওয়াতেই খুন হতে হয় নভজিৎ-কে। এই মাদকচক্রের মূল পান্ডা শেখ আনোয়ারের হদিশ পায় পুলিশ। সুমিত এবং আনোয়ার দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, তিন ভাইয়ের সংসারে বড় দাদা নভজিৎ। খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে ইডলি–ধোসার দোকান ছিল তাঁর। মেজ ভাই সুমনের ছিল ভুসিমালের দোকান। কিন্তু ছোট ভাই নেশা করেই ঘুরে বেড়াত। আর মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে! যা নিয়ে সংসারে ছিল তীব্র অশান্তি। বাড়িতে একাধিকবার সুমিতের খোঁজে পুলিশও এসেছে। মেজ ভাই সুমন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে দাঁড়িয়ে কড়া শাস্তির দাবি করে বলেন, ‘ও যেন চরম শাস্তি পায়। ফাঁসি বা যাবজ্জীবন হয়।’
এই মাদক চক্রে যুক্ত থাকা আরও তিনজনকে খুঁজছে পুলিশ। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের ধারণা খুনের উদ্দেশ্য নিয়েই মোটরবাইকের ধাক্কা মেরে ছিল ওই যুবক। মোটরবাইকের মালিক এবং ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত আরও তিনজনের নাম পেয়েছি। সকলকেই গ্রেফতার করা হবে।’