'দাদার অনুগামী'-রা এখন বেশ বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। কারণ তাঁরা 'দাদার অনুগামী' হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও এখন কী করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না। কারণ স্বয়ং শুভেন্দু অধিকারী নিজে মুখে কিছু ঘোষণা করেননি। ফলে কাটোয়া, মেমারি, জামালপুর, মন্তেশ্বরের মতো পূর্ব বর্ধমান জেলার একাধিক জায়গায় শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দিয়ে ‘দাদার অনুগামী’-দের পোস্টার যাঁরা ফেলেছিলেন, তাঁরা এখন চাপে পড়ে গিয়েছে। কারণ তৃণমূল তাঁদেরকে চিহ্নিত করে ফেলেছে। এখন 'অনুগামী'-রা 'দাদা'-র সঙ্গে যোগাযোগ করে উঠতে পারেননি। এই বিষয়ে কোনও নির্দেশও আসেনি। এটাই চাপের।
দলের রাজ্যের মুখপাত্র তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ–সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘বাঁকুড়ার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, কে–কার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তা দল জানে। তেমনি মুখ্যমন্ত্রীও নজরে রাখছেন। আমরা মনে করি, তৃণমূল ছেড়ে কেউ অন্য কোথাও গেলে হালে পানি পাবেন না।’ বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই এই ভোকাল টনিক দিয়ে কর্মী–সমর্থকদের ধরে রাখতে চাইছে তৃণমূল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
সূত্রের খবর, দলের অনেকেই পদত্যাগ করা রাজ্যের পরিবহন ও সেচমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে মনে করছে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব। কয়েকদিন ধরে কালনা মহকুমার এক বিধায়ককে দলীয় কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে না। শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগের পরে ওই নেতাকে নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। জেলার আরও তিন বিধায়কের গতিবিধির উপরেও নজর রাখা হচ্ছে। তবে এই চার বিধায়কের জায়গায় দল বিকল্প প্রার্থীর খোঁজ শুরু করে দিয়েছে। প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা স্থানীয় স্তরে গিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে।
কাটোয়ার গিধগ্রামের কারুলিয়া গ্রামের সুমন্ত ঘোষের দাবি, ‘দাদার পথই আমাদের পথ—এই বার্তা আমরা জেলায় ছড়িয়ে দেব।’ যদিও তৃণমূলের যুব সংগঠনের জেলা সভাপতি রাসবিহারী হালদার বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে সবাই দল করেন। কেউ তো আর দল ছেড়ে যাননি। এইসব অপপ্রচার সবটাই বিজেপি’র চক্রান্ত।’ আর বিজেপি জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দী কটাক্ষ করে বলেন, ‘তৃণমূলের ঘরে একটাই পোস্ট, বাকিরা ল্যাম্প পোস্ট। আশা করি, তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুভেন্দু অধিকারী আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন।’