শতায়ু এক বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্বামীর বর্ধিত পেনশন ও কাগজপত্র তুলে দিল হাওড়া পুরসভা। এমন অবস্থায় একদিকে যেমন পুরসভার এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন অনেকে তেমনি পুরসভার এই আচরণ নিয়ে সমালোচনা করেছেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। কারণ দীর্ঘদিন ধরে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন দেওয়া হচ্ছে না বলে পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ নিয়ে প্রায় তাঁরা প্রায়ই বিক্ষোভ করেন। সেই হবে বৃদ্ধার বাড়িতে পৌঁছে গিয়ে পেনশন তুলে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অবসপ্রাপ্ত কর্মীরা। যদি ও পুরসভার দাবি, আর্থিক সমস্যা সত্বেও পুরসভা যে পেনশন দিতে আগ্রহী তা বোঝাতেই বাড়িতে গিয়ে পেনশন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: অনলাইন পরিষেবা চালু হতেই হাওড়া পুরসভার আয় বেড়েছে ৩-৪ গুণ
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া পুরনিগমের প্রাক্তন কর্মচারী তারাশঙ্কর ভট্টাচার্যের স্ত্রী কনকলতা ভট্টাচার্য্য সাঁকরাইলে চুনাভাটি অঞ্চলের রাধাদাসী পাঁচপাড়া এলাকার বাসিন্দা। শুক্রবার তাঁর হাতে ফ্যামিলি পেনশনের নথি তুলে দেন হাওড়া পুরনিগমের চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পৌরনিগমের শীর্ষ আধিকারিকরা। এই ধরনের ফ্যামিলি পেনশনের অঙ্ক দ্বিগুণ করে দেওয়া হাওড়া পুরনিগমের ইতিহাসে এই প্রথম বলে দাবি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, তারাশঙ্করবাবু পুরনিগমের মোটর বিভাগের কর্মী ছিলেন। ওনার মৃত্যুর পর পেনশন পাচ্ছিলেন ওনার স্ত্রী কনকলতা। আগে তিনি ৯ হাজার টাকা পেনশন পেতেন। তবে এবার থেকে তা দ্বিগুণ প্রায় ১৮ হাজার টাকা করে দেওয়া হল। তাঁর ছেলে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যও পুরসভার ওয়ার্কশপের কর্মী ছিলেন। মনোরঞ্জনবাবুর ছেলে প্রদীপ ভট্টাচার্যও পুরনিগমের ৫ নং বরোর বর্তমান কর্মী।
চেয়ারপার্সন জানান, প্রতিমাসে ২১০৮ জনকে পেনশন দিচ্ছে পুরসভা। এর জন্য মাসে খরচ হচ্ছে ৩ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। তাঁর দাবি, যারা ঠিকমতো নথি জমা দেন না তাঁদের পেনশন আটকে যায়। পুরসভার কর্মী প্রদীপ ভট্টাচার্যও একই কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবারের দুজনেই নিয়মিত পেনশন পাচ্ছেন। আসলে আমাদের কাগজপত্র ঠিকমতো জমা হয়েছিল।’ সমালোচনা করেছে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের সংগঠন হাওড়া কর্পোরেশন রিটায়ার্ড এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন। তাদের বক্তব্য, আসলে এভাবে পুরসভা প্রচার করতে চাইছে যে তারা কর্মীদের পেনশন দিতে তৎপর। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পুরসভা ইচ্ছা করে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন দিচ্ছে না। যারফলে তারা সমস্যায় পড়ছেন।