তিন মাস আগেই প্রেম করে বিয়ে হয়েছিল যুগলের। তার মধ্যেই খুন হতে হল বধূকে। স্ত্রীকে খুন করে তাঁর দেহ বস্তাবন্দি করে ফেলেছিল স্বামী। পরে দেহ লোপাট করতে স্ত্রীর মৃতদেহ গোয়াল ঘরের মাচায়ও তুলে রাখে সে। তবে কাল হল দেহে পচন ধরতেই। বৃহস্পতিবার রাতে ওই দম্পতির বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। এতেই প্রতিবেশীদের সন্দেহের তিরে পড়ে যান স্বামী। স্ত্রী কোথায় আছে, সেবিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলেও কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি ওই ব্যক্তি।
এর পরেই পুলিশে খবর দেন পড়শিরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গোয়াল ঘরের মাচার উপর থেকে ওই বধূর দেহ উদ্ধার করে। তার পরেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত স্বামীকে।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের কাইগ্রাম এলাকায়। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন মাস আগেই প্রণয়ের সম্পর্কের জেরে কাইগ্রামের বাসিন্দা ফুলকলি খাতুনের (১৮) বিয়ে হয় ওই গ্রামেরই বাসিন্দা বাবু শেখের সঙ্গে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাসের দাম্পত্যেই দু’জনের মধ্যে নিত্যনৈমিত্তিক ঝগড়াঝাটি অশান্তি লেগেই থাকত। দিন দু’এক আগেই ঘটনার সূত্রপাত। আচমকাই বাড়ি থেকে নিখাঁজ হয়ে যান ওই বধূ। তাঁকে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করতে পারছিলেন না—তাঁর বাপের বাড়ির লোকেরা। ফুলকলির শ্বশুরবাড়ির তরফে বারবার বলা হচ্ছিল, ঘরের বউ ঝগড়ঝাঁটি করে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে। সেইমতো বৃহস্পতিবার বাইক নিয়ে স্ত্রীকে খোঁজার জন্য বেরিয়েও পড়ে বাবু শেখ। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে, তার আগেই সে স্ত্রীকে পরিকল্পনামাফিক খুন করে দেহ বস্তায় পুড়ে গোয়াল ঘরের মাচায় তুলে রাখে।ভেবেছিল, সুযোগ বুঝে পরে দেহ লোপাট করে ফেলবে।
এদিকে, এদিন সকলের চোখে ধুলো দিয়ে দিনভর স্ত্রীকে খোঁজার ভান করতে থাকে বাবু শেখ।রাতে একাই বাড়িতে ফিরে আসে। এদিনই আরও গভীর রাতের দিকে বাবুর বাড়ির গোয়ালঘর থেকে দুর্গন্ধ পান প্রতিবেশীরা। তখনই সন্দেহ হয় তাঁদের। রাতেই খবর দেওয়া হয় মন্তেশ্বর থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গোয়ালঘর ঘুরে দেখে। তখনই তারা দেখতে পান মাচায় একটি বস্তা রাখা রয়েছে। সেটি নামানোর পর বস্তাটি খোলা হলে তার মধ্যে থেকেই ওই বধূর পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। তারপর দেহটিকে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ।
তবে খুন করে দেহ লোপাটের এত নিখুঁত পরিকল্পনা দেখে চোখ কপালে দুঁদে পুলিশ অফিসারদের। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, বাবু শেখই স্ত্রীকে খুন করে বস্তাবন্দি দেহটি পাচার করে দেওয়া উদ্দেশ্য গোয়াল ঘরের মাচায় তুলে রেখেছিল। এর পর বাবু শেখকে গ্রেপ্তার করেছে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ।