দীর্ঘ ১৩ বছর পর শিলিগুড়িতে এলেন বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা। শিলিগুড়ির সালুগারা এলাকাতে অবস্থিত সেদ গুয়েড মনেস্ট্রিতে এসেছেন দলাই লামা। সেখানে টিবেটান ধর্ম নিয়ে শিক্ষা দান করেন। আজ, বৃহস্পতিবার দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিম, ডুয়ার্স–সহ পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল, ভুটান থেকে প্রায় কুড়ি হাজার ভক্তদের সমাগম হয় ওই মনেস্ট্রিতে। আজকের এই কর্মসূচি শেষ করে তিনি নয়াদিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন বলে খবর। তবে আজ বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে চিনকে তুলোধনা করেছেন বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা।
এদিকে ১১ ডিসেম্বর গ্যাংটক গিয়েছিলেন দলাই লামা। গ্যাংটক, সিকিম হয়ে আজ শিলিগুড়ি পৌঁছন তিনি। তাঁকে স্বাগত জানাতে রাস্তায় ফুল হাতে হাজির হন ভক্তরা। তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান সকলেই। এখানেই তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতে স্বাধীন।’ তাহলে কি চিনের মাটিতে পরাধীন? উঠছে প্রশ্ন। তবে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা। আর দলাই লামার এই সফর নিয়ে খুশি বৌদ্ধ ধর্মগুরু থেকে শুরু করে মন্ত্রীও। এই বিষয়ে সিকিমের মন্ত্রী সোনম লামা বলেন, ‘ওঁর বক্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করে। শান্তিপূর্ণভাবে জীবন কাটাতে সাহায্য করে।’
অন্যদিকে চলতি মাসে দলাই লামা সিকিম আসেন। আজ সিকিম থেকে শিলিগুড়িতে আসেন তিনি। তার এই সফরকে ঘিরে শালুগাড়া এলাকাতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় থাকতে দেখা যায়। মোতায়েন করা হয় পুলিশ বাহিনী। একইসঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ট্রাফিক এডিসিপি ডিসিপি–সহ অন্যান্যরা। এদিন বিশেষ অতিথি হিসেবে এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব এবং ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার। সবাই দলাই লামাকে স্বাগত জানান। আর ধর্মীয় বিষয় নিয়ে নানা কথা হয় তাঁদের মধ্যে। দলাই লামাকে কাছে পেয়ে বেশ খুশি গৌতম দেব। তাঁকে দেখা গেল, ধর্মীয় বিষয় নিয়ে কথা বলতে।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি বৈঠক এড়ালেন বিরোধী দলনেতা, সিদ্ধান্ত জানালেন এক্স হ্যান্ডেলে
এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দলাই লামা। সেখানেই চিনকে তুলোধনা করে মন্তব্য করেন। আজ, বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে দলাই লামা বলেন, ‘আমরা ভারতে স্বাধীন। আমাদের দেশে আমরা শরণার্থী কিন্তু ভারতে স্বাধীনতা রয়েছে।’ এই মন্তব্য এখন বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। ভারত–চিনের সঙ্গে ঠাণ্ডা লড়াই লেগেই রয়েছে। প্রায়ই ভারতের নানা অংশ দখল করতে তৎপর হয় চিন। আর ভারত তখন তাড়া করে। সেখানে ভারতে দাঁড়িয়ে চিনের বিরুদ্ধে এমন তোপ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। দলাই লামা চেষ্টা করেছিলেন বহুবার চিন থেকে তিব্বতকে স্বাধীন করতে। জওহরলাল নেহরু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময় থেকে সেই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তারপর এমন মন্তব্যে চিনের কেমন প্রতিক্রিয়া হয় সেটাই দেখার।