বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > JU Student Death: দারিদ্রকে হারিয়ে দিয়েছিল মেধা, গ্রেফতার সত্যব্রতর বাবা-মায়ের দু'চোখে শুধু আঁধার

JU Student Death: দারিদ্রকে হারিয়ে দিয়েছিল মেধা, গ্রেফতার সত্যব্রতর বাবা-মায়ের দু'চোখে শুধু আঁধার

ধৃত সত্যব্রত রায়। 

ফল বিক্রেতা বাবার ছেলে সত্যব্রত মেধার জোরে সুযোগ পেয়েছিলেন যাদবপুরে। 
  • বছর ঘুরলেই ছেলে পাবে মোটা মাইনের চাকরি, আশায় বুক বেঁধেছিলেন বাবা - মা। 
  • হস্টেলে এক ছাত্রের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। ডিন অফ স্টুডেন্টসকে ফোন করে খবর দিয়েছিলেন যে ছাত্র তাঁকেই শুক্রবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে প্রথম বর্ষের ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন নদিয়ার হরিণঘাটা পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সত্যব্রত রায়। টিভির পর্দায় সেই খবর দেখে কার্যত উদ্ভ্রান্তের মতো অবস্থা বাবা - মায়ের। হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে পড়াশুনো করে দিন ফেরাবে, এই আশায় বুক বেঁধেছিলেন বাবা প্রদীপ রায় ও মা রুমাদেবী। ছেলের জন্য উকিল দেওয়ার টাকাও নেই বলে জানালেন প্রদীপবাবু।

    হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে সত্যব্রত পড়াশুনোয় ছোটবেলা থেকেই ছিল চৌখস। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম তিনের বাইরে বেরোননি কখনও। পেশায় ফল বিক্রেতা প্রদীপবাবু ছেলেকে কনভেন্টে পড়িয়েছেন। উচ্চ মাধ্যমিকেও দারুণ ফল করেছিলেন তিনি। তার পর বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশুনো শুরু করেন। কিন্তু টাকার অভাবে সেই প্রতিষ্ঠান ছাড়তে হয়। এর পর মুর্শিদাবাদের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা করেন। সেই কোর্স শেষ হলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স পড়ার সুযোগ পান। চতুর্থ বর্ষের এই ছাত্র মেইন হস্টেলেই থাকতেন।

    বাবা প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, ছেলে হস্টেলে সুযোগ পাওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলাম। যাক খরচ একটু কমবে। কিন্তু সেখানে যে এই কাণ্ড বাঁধবে তা কে জানত? তিনি বলেন, ৯ অগাস্টের ঘটনার পর ছেলের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। ছেলেকে বলেছিলাম, বাড়ি চলে আয়। ও বলল, বাবা, এখন বাড়ি যাওয়া যাবে না, গেলে সন্দেহ করবে।

    তিনি বলেন, শেষবার গত ৩০ জুলাই বাড়ি এসেছিল সত্যব্রত। ৩১ জুলাই ফিরে যায়। শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ ওর সঙ্গে কথা হয়েছে। ও আমাকে বলল, বাবা পুলিশ কিছু কথা জানতে আমাকে থানায় ডেকেছে। আমি যা জানি সব বলে দেব। চিন্তা কোরো না। আমি নির্দোষ।

    পুলিশ সূত্রে খবর, হস্টেলের যে ঘরে নিহত ছাত্রের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছিল সেখানেই ছিলেন সত্যব্রত। রাত ১০টা ০৫ মিনিট নাগাদ তিনিই ডিন অফ স্টুডেন্টসকে ফোন করে বলেন, এক ছাত্রকে তিন তলা থেকে ঝাঁপ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।

    যেমন তেমন করে আর ১টা বছর কাটাতে পারলেই সুদিন আসবে। পড়া শেষ করে মোটা মাইনের চাকরিতে ঢুকবে ছেলে। এই আশায় বুক বেঁধেছিলেন সত্যব্রতর বাবা - মা। শুক্রবার রাতে ছেলের গ্রেফতারিতে তাঁদের দু’চোখ ঢেকেছে অগাধ আঁধারে।

     

    বন্ধ করুন