বছর তিনেক আগে স্টেশনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল মায়ের। নিয়তির পরিহাসে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল ছেলের সঙ্গে। ঠিক একইভাবে স্টেশনেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল চিকিৎসক ছেলের। মৃত চিকিৎসকের নাম অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া স্টেশনে। মর্মান্তিক এই মৃত্যুর ঘটনায় তরুণ চিকিৎসকের পরিবারে এবং বাঁকুড়ার চিকিৎসক মহলে শোকের ছায়া নেমেছে।
আরও পড়ুন: জৈন সন্ন্যাসীর মৃত্যুতে চাঞ্চল্য, দেহ টুকরো করে ফেলা হয়েছে, দাবি অভিযুক্তের
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণ চিকিৎসক এবছর পেডিয়াট্রিকে এমডি করেছিলেন। তিনি বাঁকুড়া শহরের মাচানতলার বাসিন্দা। বাঁকুড়ার জেলা স্কুলের একজন কৃতি ছাত্র ছিলেন অরিজিৎ। আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস করার পর ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে তিনি এমডি করছিলেন। পুলিশ এবং পারিবারিক সূত্র জানা গিয়েছে, তাঁর এক পরিচিতর রেজিস্ট্রি বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। সেই উপলক্ষে তিনি কলকাতা থেকে আগত বন্ধুদের বাঁকুড়া স্টেশনে আনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত সিড়ি বেয়ে স্টেশনে ওঠার পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন ওই তরুণ চিকিৎসক। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বছর তিনেক আগে অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মায়ের হাওড়া স্টেশনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল। তারপর থেকে বৃদ্ধ বাবা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকছিলেন অরিজিৎ। তাঁর স্টাইপেন্ডের টাকাতেই চলত সংসার। তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। মায়ের পর ছেলেরও একইভাবে মৃত্যুর খবরে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
জানা গিয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যে অরিজিতের কাউন্সেলিং ছিল। সেই কাউন্সেলিং নিয়ে অরিজিৎ চিন্তার মধ্যে ছিলেন। এদিকে, এই ঘটনার পরে অরিজিতের মায়ের মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে ধরে সোশ্যাল মাধ্যমে তাঁর ছবি পোস্ট করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন অসিত বাবুর বন্ধু সুব্রত দরিপা। তিনি জানান, হৃদরোগে কম বয়সী ছেলে মেয়েদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর শুনছি এবং দেখছি। কিন্তু কাছের একজনকে এরকমভাবে হারাতে হবে তা ভাবিনি। পোস্ট থেকেই তরুণ চিকিৎসকের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে। স্ত্রীর পরে একইভাবে একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে কার্যত দিশেহারা হয়ে ভেঙে পড়েছেন অসিত বাবু।