বাবা এবং ছেলে দু’জনেই অধিকারী পরিবারের বিরোধী। বাবা রাজ্যের মন্ত্রী। পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। আর ছেলে সদ্য কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান হলেন। হ্যাঁ, রাজ্যের কারামন্ত্রীর পুত্র সুপ্রকাশ গিরি। আর ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন নিরঞ্জন মান্না। সুতরাং অধিকারী জমানার শেষ হতে চলেছে কাঁথি পুরসভায় বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের একবার তাঁর পুরনো সহকর্মী অখিল গিরির প্রতি আস্থা রাখলেন। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এটা বড় পদক্ষেপ। কারণ ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা সুপ্রকাশ জেলায় আলোড়ন ফেলতে পারছিলেন না। এবার সেটা বেশ সহজ হবে।
এদিকে অধিকারী পরিবারের খাসতালুক কাঁথি পুরসভায় এবার নির্বাচন হয়। যার ফলাফল দাঁড়ায় ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ১৭টি আসন, বিজেপি ৩টি আসন এবং নির্দল ১টি আসন পায়। তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করার পর নানা নাম ভেসে ওঠে। তবে শিঁকে ছেঁড়ে সুপ্রকাশ গিরির কপালে। বাবা প্রবীণ, তিনি মন্ত্রী। ছেলে নবীন, তিনি কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান। সুতরাং এখানে নবীন–প্রবীণ মিশেল ঘটালেন দলনেত্রী বলে মনে করা হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে সরাসরি টক্কর নেবেন সুপ্রকাশ। যা শুভেন্দুর কাছে চাপের হতে পারে।
অন্যদিকে অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ায় বর্ষীয়ান কাউন্সিলর সুবল মান্নাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সাংসদ শিশির অধিকারীকে ‘গুরুদেব’ বলে সম্বোধন করেছিলেন সুবল। তাছাড়া পা ছুঁয়ে প্রণাম করার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়। এটা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন খোদ দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তখন থেকেই অপসারণের কাজ শুরু হয়। অবশেষে এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে নির্দেশ আসে পদত্যাগ করার। সেই নির্দেশ অমান্য করেন সুবল মান্না। এমনকী তাঁকে অনৈতিকভাবে সরানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সুবল মান্না।
আরও পড়ুন: হঠাৎ জেলার মিষ্টির দোকানে ঢুকে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী, কিনলেন ১৩ হাজার টাকার মিষ্টান্ন
এছাড়া এই বিষয়ে আদালতের রায় আসার আগেই ১৬ জন কাউন্সিলের সম্মতিক্রমে সুবল মান্নার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়। তারপরই চেয়ারম্যান অপসারণ হয়ে যায়। আর তারপর থেকেই সুপ্রকাশ গিরি দায়িত্বে এলেন পুরপ্রধানের। স্থায়ী পুরপ্রধান না থাকায় নানা প্রশাসনিক কাজে সমস্যা হচ্ছে। পৌর পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও অসুবিধা দেখা দেয়। সূত্রের খবর, এই সব সমস্যা কাটাতে এবং স্থায়ী পুরপ্রধান বাছতে রাজ্যের নির্দেশে বৃহস্পতিবার কাঁথি পুরসভার পক্ষে ২১ জন কাউন্সিলরকেই চিঠি দিয়েছে তলবি সভায়।