আইনজীবীর মক্কেল একটি খুনের মামলায় আসামী। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও দিয়েছিল আদালত। তবে মক্কেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আটকাতে আইনজীবী যে কাণ্ড করলেন তার জন্য গ্রেফতার করা হল তাকে। এই ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমা আদালতে। ওই আইনজীবীর নাম অরিন্দম রায়। তিনি কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থেকে সিআইডি ওই আইনজীবীকে গ্রেফতার করেছে।
আরও পড়ুন: কোলাঘাটে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনে CBI চান বাবা, পাশে দাঁড়ালেন শুভেন্দু
কেন গ্রেফতার করা হয়েছে আইনজীবীকে?
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মক্কেলের হয়ে হাইকোর্টের ভুয়ো জামিন অর্ডার আদালতে পেশ করেছিলেন ওই আইনজীবী। সেই অপরাধে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০১৫ সালে মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর থানার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামে বালিরঘাট দখলকে কেন্দ্র করে বোমাবাজিতে মৃত্যু হয়েছিল আশরাফ শেখ নামে এক ব্যক্তির। আর সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে ভরতপুর থানার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা লালু শেখের। ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বেশ কয়েক বছর ধরে মামলা চলার পর আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। তবে এর পরেই আইনজীবী নিজের মক্কেল তথা অভিযুক্ত লালু শেখকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য সেই সময় কান্দি মহকুমা আদালতে হাইকোর্টের একটি জামিনের নির্দেশ পেশ করেছিলেন। যার ফলে অভিযুক্তকে জামিন দিতে বাধ্য হয় কান্দি মহকুমা আদালত।
এদিকে, অভিযুক্তকে জামিনে দেখে অবাক হয়ে যান মৃতের পরিবারের সদস্যরা। এরপর জামিনের অর্ডার সত্যি কিনা তা জানতে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই ঘটনার তদন্ত নেমে সিআইডি জানতে পারে, হাইকোর্ট থেকে এই ধরনের জামিনের কোনও নির্দেশই দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ কলকাতা হাইকোর্টের তরফে আইনজীবী যে জামিনের অর্ডার আদালতকে দেখিয়েছিলেন সেটি ছিল ভুয়ো। সেই ঘটনায় সিআইডি মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থেকে পেশায় কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী অভিযুক্ত অরিন্দম রায়কে গ্রেফতার করে।
ধৃতকে এদিন আদালতে তোলা হয়। তার ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়েছিল সিআইডি। তার ভিত্তিতে ওই আইনজীবীকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ওই আইনজীবী আরও কোনও ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশনামা দেখিয়ে কারচুপি করতে পারে বলে অনুমান সিআইডির। গোয়েন্দারা তা জানার জন্য ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন বলে জানা গিয়েছে।