কষ্ট করে অর্থ জোগাড় করে পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছিলেন বাবা। কিন্তু, মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষা মনের মতো হয়নি। তাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মঘাতী হল এক ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা থানার বেড়াচাঁপা ১ নম্বর পঞ্চায়েতের পূর্ব চ্যাংদানা গ্রামের গোবরপাড়ায়। ঘটনাস্থল থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে, তাতে ওই ছাত্রী কষ্ট করে বাবার অর্থ সংগ্রহ করা এবং পরীক্ষা ভালো দিতে না পারার কথাই উল্লেখ করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ওই পরীক্ষার্থীর নাম নাসিমা খাতুন (১৭)।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলায় আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন অভিযুক্ত ছাত্রীর বাবা
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার অঙ্ক পরীক্ষা দিয়ে আসার পরে একটু চুপচাপ ছিল নাসিমা। সে পরিবারের সকলকে জানিয়েছিল, তার পরীক্ষা ভালো হয়নি। তবে এর জন্য পরিবারের সদস্যরা তাকে বকাবকি করেননি বলে জানান এক আত্মীয়। পরের দিন জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল নাসিমা। পড়াশোনা করার পর রাতে সকলে একসঙ্গে খেয়ে নিজের ঘরে চলে যায়। এরপর শুক্রবার ভোরে পরিবারের সদস্যরা তার ঘরে আলো জলতে দেখেন। সকলে ভেবেছিলেন নাসিমা হয়তো পড়াশোনা করছে। কিন্তু, পরীক্ষার সময় হয়ে যাওয়ার পরেও বাইরে না বেরোনই তাকে ডাকাডাকি করতে শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। শেষে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করতেই তার ঝুলন্ত দেখতে পান।
ঘটনাস্থল থেকে ৬ পাতার সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। তাতে ছাত্রীটি লিখে গিয়েছে, ‘আমি আর পারলাম না। তাই আমি চললাম। বাবা কষ্ট করে খরচ জুগিয়েছে। কিন্তু আমি সেই কষ্টের দাম দিতে পারলাম না। তাই চললাম।’ জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রী বেড়াচাঁপা বীণাপাণি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার আসন পড়েছিল দেগঙ্গার চৌরাশি হাইস্কুলে। বৃহস্পতিবার ছিল অঙ্ক পরীক্ষা। বাড়ির কেউ বকাবকি না করা সত্ত্বেও ছাত্রীটি কেন এরকম করল? তা বুঝে উঠতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। তবে সুইসাইড নোট থেকে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরীক্ষা ভালো না হওয়ার কারণেই আত্মঘাতী হয়েছে ছাত্রী। তার সুইসাইড নোটের বয়ান এবং হাতের লেখা যাচাই করে দেখবে পুলিশ। অন্যদিকে, পুরুলিয়ার পাড়া থানার আলকুশা গ্রামে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম অঙ্কিতা মাজি। সে একজন মেধাবী ছাত্রী ছিল। পুলিশ জানতে পারে শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল ওই ছাত্রীর।