এবার দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে নতুন মোটরবাইক কিনেছিলেন দুই ভাই। ইচ্ছে ছিল এই নতুন মোটরবাইক নিয়েই দুর্গাপুজোয় প্যান্ডেল হপিং করবেন তাঁরা। তাই নতুন মোটরবাইক বাড়িতে আসার পর আর অপেক্ষা করেননি দুই ভাই। তাই ওই নতুন মোটরবাইকে চড়ে দুই ভাই ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েন। সারারাত নানা মণ্ডপে ঘুরে বেড়ানোর পর নবমীর সকাল আর তাঁরা দেখতে পেলেন না। কারণ পথ দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যু হল তাঁদের। বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে মোটরবাইকের। তার জেরেই মৃত্যু হল দু’জনের।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? স্থানীয় সূত্রে খবর, দুই ভাই দুর্গাপুজোয় ঠাকুর দেখবে বলে নতুন মোটরবাইক কিনেছিলেন। তারপর সেটি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন অষ্টমীর রাতে। আর এই পথ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদা থানার মুচিয়া মহাদেবপুরে রামপাড়া এলাকায়। আজ, সোমবার সকালেই বাসের সঙ্গে মোটরবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তাতেই দুই ভাইয়ের মৃত্যু ঘটেছে। মৃতদের নাম অভিষেক হালদার (২৭) এবং সুজন হালদার (২২)। তাঁরা হবিবপুর থানার আইহো ছাতিয়ানগাছি এলাকার বাসিন্দা। ঠাকুর দেখে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু ঘরে আর ফেরা হল না দুই ভাইয়ের। বরং বাড়িতে এল শোকের খবর।
তারপর ঠিক কী হল? এই ঘটনার খবর পেয়ে দুর্গাপুজোর মধ্যেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে। তরতাজা দুটি প্রাণ ঝড়ে গেল মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায়। এটা পরিবার পরিজনরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। মৃতদের পরিবার সূত্রে খবর, অষ্টমীর রাতে নতুন মোটরবাইক বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আর তাতে করেই মামাতো ভাই সুজনের সঙ্গে রাতে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন অভিষেক। মালদা শহরে সারারাত তাঁরা ঠাকুর দেখেন। আর সকালে বাড়ি ফিরছিলেন। আর তখনই বাস ধাক্কা মারায় মৃত্যু হল দুই ভাইয়ের। অভিষেক হালদারকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ মুর্শিদাবাদে, রক্তাক্ত মহাষ্ঠমীর রাত
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, আজ সোমবার সকালে হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডী থেকে একটি মিনি বাস মালদার দিকে আসছিল। দুই ভাই মোটরবাইক নিয়ে মালদার দিক থেকে হবিবপুরে বাড়ি ফিরছিলেন। তখন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মিনি বাসের সঙ্গে তাঁদের মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। ঘটনাস্থলেই মারা যান সুজন। আর অভিষেক হাসপাতালে মারা যান। তাঁদের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। দুই ভাইয়ের মাথায় হেলমেট ছিল না। অভিষেকের দাদা কালু হালদার বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম না, তাই হেলমেট পরেছিল কি না, বলতে পারব না।’ এই পথ দুর্ঘটনা নিয়ে পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, ‘এই পথ ঘটনাটি দুঃখজনক। তদন্ত করা হচ্ছে। ঘাতক বাসটিকে আটক করা হয়েছে।’