নিজের জনমোহিনী ভাবমূর্তি ধরে রাখতে সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে অবাস্তব প্রকল্প চালাতে বেসরকারি সংস্থাকে বাধ্য করার অভিযোগ তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে নতুন নয়। বার বার লোকসানের মুখে পড়েও তাই টাকা ঢালতে হয়েছে বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে। লোকসভা ভোটের মুখে আরেকবার সেরকমই গুনেগার দেওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের মিষ্টি ব্যবসায়ীদের মধ্যে। কারণ, সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত ব্যর্থ প্রকল্প ‘মিষ্টি হাব’ চালু করার চিন্তা ঠেলা দিয়ে উঠেছে।
পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে জাতীয় সড়কের পাশে মিষ্টির দোকানে জলখাবার খাননি এমন লোক পাওয়া মুশকিল। সেখানকার পরিকাঠামো উন্নয়নের বদলে ২০১৭ সালে বর্ধমান জেলা ভাগের সময় জাতীয় সড়কের পাশেই বামচাঁদাইপুরে ‘মিষ্টি হাব’ হবে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। যেমন ঘোষণা তেমনি কাজ। জমি অধিগ্রহণ করে মিষ্টি হাব তৈরি করতে নেমে পড়ে প্রশাসন। সেখানেই প্রথমে গড়ে ওঠে ১ তলা মিষ্টি হাব। যেখানে স্টল ছিল ১০টি। নামকরা সব মিষ্টির দোকানকে স্টল দেওয়া হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ ও বাসচালকদের পছন্দ রয়ে যায় সেই শক্তিগড়। বাস না দাঁড়ানোয় লোকসান হতে শুরু করে মিষ্টির দোকানগুলির। এর মধ্যে মিষ্টি হাব একতলা থেকে দোতলা হয়ে যায়। আরও মিষ্টির দোকানকে স্টল বিলি করা হয়। কিন্তু তাতে পরিণতি কিছুমাত্র বদলায়নি। ধুঁকতে ধুঁকতে বন্ধ হয়ে যায় মিষ্টি হাব।
২০২২ সালে পূর্ব বর্ধমানে এক প্রশাসনিক বৈঠকে ফের মিষ্টি হাব চালুর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার ঝাঁপিয়ে পড়েন প্রশাসনিক আধিকরা। নারাজ মিষ্টি ব্যবসায়ীদের বাগে আনতে শেষ পর্যন্ত দোকান ঘর কেড়ে নেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা। রাজ হুমকির মুখে খোলে ৫টি মাত্র দোকান। কয়েক মাসের মধ্যে ফের সেগুলি বন্ধ হয়ে যায়।
পুজোর আগে ফের একবার মিষ্টি হাব খোলার তোড়জোড় শুরু করেছে পূর্ব বর্ধমান প্রশাসন। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। ফের তাঁদের ঘাড়ে কাঁঠাল ভেঙে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি করার চেষ্টা করবেন বলে মনে করছেন তাঁর।