আর কয়েকদিন পর শুরু হয়ে যাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফর। এই জেলা সফরে থাকছে জঙ্গলমহলের তিন জেলা—পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রাম। এই তিন জেলায় ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে সতর্কবার্তা। নবান্ন থেকে একাধিক বিভাগকে বিশেষ সতর্ক থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই সতর্ক বার্তায় সবার উপরে রয়েছে— বন্যপ্রাণীর হামলায় গ্রামাঞ্চলে যেন প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে। আসলে ইদানিং জঙ্গল থেকে লোকালয়ে বেরিয়ে আসছে নানা জীবজন্তু। তাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন মানুষজন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী একজন ভিভিআইপি। তাঁর সফরে যাতে এমন কিছু না ঘটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে কয়েকবছর আগে দক্ষিণবঙ্গের দু’টি জেলায় সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেখানে গিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে হাতির উপদ্রব দেখা দেওয়া নিয়ে বনকর্তাদের বেজায় ধমক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবার যাতে না ঘটে তার জন্যই এই আগাম সতর্কবার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। বন বিভাগ সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সফরে সবসময় বাড়তি ও বিশেষ নজরদারি থাকে। একাধিক বনাঞ্চলের রেঞ্জ অফিসারদের সতর্ক করা হয়। হাতি–সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর গতিবিধি নজরে রাখতে বনবস্তি অথবা অরণ্য সংলগ্ন গ্রামীণ বাসিন্দাদের নিয়ে তৈরি বন সংরক্ষণ কমিটিগুলিকে সতর্ক থাকতে বলাই নিয়ম।
আরও পড়ুন: ভিভিআইপি ডিউটি করার সময় মাথা ঠাণ্ডা রাখার নির্দেশ, পুলিশকে সতর্কবার্তা লালবাজারের
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর নিয়ে এখন আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখন সাজসাজ রব উঠেছে এই তিন জেলায়। এই বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গের এক বনের অফিসার বলেন, ‘নির্দেশ পেয়ে গিয়েছি। কিন্তু সেটা কার্যকর করতে গেলে তো বরাদ্দ লাগে। টাকা আগে নন–বাজেটারি ফান্ড থেকে প্রত্যেকটি বিভাগে বরাদ্দ করা হতো। তা দিয়ে হাতি তাড়ানো থেকে শুরু করে পটকা কেনা, গ্রামে প্রচার করার কাজ চলত। জঙ্গলে দাবানল লাগলে এখন আগুন নেভানোর টাকা পেতেই ঘাম ছুটে যায়।’ সুতরাং অর্থের একটা অভাব এখানে আছে বলে অভিযোগ।
এছাড়া উত্তরবঙ্গে হাতির উপস্থিতি সবসময় থাকে। চিতাবাঘের লোকালয়ে চলে আসার ঘটনা নিয়মিত বলা যায়। দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরে দু’টি ডিভিশনে এখন অন্তত ৪২টি হাতি আছে। বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রামও দপিয়ে বেড়ায় প্রায় ৮০টি হাতির একটি দল। দলমা পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতির আনাগোনা লেগেই থাকে। তারা লোকালয়ে চলে এলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাছাড়া জমি থেকে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়। তা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গের এক বন দফতরের অফিসার অভিযোগ করেন, ‘বন্যপ্রাণীর হানায় প্রাণহানি ঘটলে আগে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে গ্রামবাসীকে শান্ত করতাম। এখন সেই টাকা পেতেও সময় লাগে।’