বছর ঘুরলেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘ওয়ার্ম আপ’ শুরু করে দিয়েছে সব রাজনৈতিক দল। আসন পুনর্বিন্যাস, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ–সহ নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি সেরে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু কবে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য–রাজনীতিতে। আগে গুঞ্জন ছড়িয়ে ছিল ফেব্রুয়ারি মাসে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এবার নবান্নের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মে মাসেই হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন।
কেন মে মাসে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন? সূত্রের খবর, মে মাসের আগে পঞ্চায়েত নির্বাচন হলে গ্রামোন্নয়নের কাজ থমকে যাবে। নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা হলে কোনও নতুন কাজ করা যাবে না। সেক্ষেত্রে কাজের সুফল সরকার পাবে না। বরং বিরোধীরা অমীমাংশিত কাজ দেখিয়ে ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে। রাজ্যের মন্ত্রীরা মনে করছেন, আর্থিক বছরের শেষ দিকে এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের গোড়ায় আবাস যোজনা, সড়ক যোজনার মতো গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পগুলির বরাদ্দ অনুমোদন কেন্দ্রের কৌশলী সিদ্ধান্ত। এখন প্রকল্পগুলির সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে না পারলে দায় গিয়ে পড়বে রাজ্যের উপর। তাই এখন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমস্ত শর্ত মেনে প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নই প্রধান লক্ষ্য। তাহলেই সাফল্য মিলবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের সময়সীমা এক মাস বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। শিবিরে জমা পড়া আবেদন খতিয়ে দেখে পরিষেবা দিতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। নবান্ন সূত্রে খবর, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৫০০০ পাট্টা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। চলতি দুয়ারে সরকার শিবিরে পাট্টা চেয়ে ৩২ হাজার আবেদনপত্র এসেছে। আবেদনপত্র যাচাইয়ের কাজ জানুয়ারি মাসে শেষ করে ফেব্রুয়ারিতে পাট্টা তুলে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর মাধ্যমিক পরীক্ষা (শুরু ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে)। ১৪ মার্চ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু। সুতরাং তখন পঞ্চায়েত নির্বাচন করা যাবে না।
ঠিক কী ইঙ্গিত মিলেছে? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক নবান্নের এক আমলা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার ছক করেই টাকা পাঠিয়েছে। যাতে রাজ্যের ঘাড়ে সব দায় বর্তায়। কিন্তু মানুষের কাছে প্রকল্প ও কাজ পৌঁছে দিতে সময় তো লাগবেই। আর পরীক্ষার আবহে পঞ্চায়েত নির্বাচন চাইবে না রাজ্য। তাই পাল্টা মানুষের কাজ করেই এই নির্বাচন করা হবে। ফলে মে মাসের আগে পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্ভব নয় কোনওভাবেই।’ উল্লেখ্য, ২০১৮ সালেও মে মাসেই পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল।