লোকসভা ভোটে এগিয়ে আসতেই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ। বিভিন্ন প্রান্তে চলছে নাকা তল্লাশি। আর এবার সেই নাকা তল্লাশির সময় বিজেপি নেতা ও নেত্রীর গাড়ি থেকে উদ্ধার হল লক্ষ লক্ষ টাকা। বিজেপির মাল বিধানসভার কনভেনার রাকেশ নন্দী এবং বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী দীপা বণিকের গাড়ি থেকে কয়েক লক্ষ নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে। এমন ঘটনায় তীব্র আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে বিজেপি।
আরও পড়ুন: ভোটের মুখে দিল্লি-হাওড়া রাজধানী এক্সপ্রেস থেকে উদ্ধার ৫০ লাখ, কোলাঘাটে ২০ লাখ
জানা গিয়েছে, দুজনের কাছ থেকে সব মিলিয়ে মোট ৯ লক্ষ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত সাড়ে ৮ টা নাগাদ মাল মহকুমার ক্রান্তি ব্লকের মসজিদ মোড় এলাকায়। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে পুলিশের একটি দল সেখানে রাতে তল্লাশি চালাচ্ছিল। তার নেতৃত্বে ছিলেন ক্রান্তি থানার ওসি বুদ্ধদেব ঘোষ। সেই সময় বিজেপি নেতা রাকেশ নন্দী দলের কাজ সেরে গাড়িতে করে মালবাজারের বাড়িতে ফিরছিলেন। তখনই তাঁর গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। গাড়ির ডিকিতে এই পরিমাণ টাকা রাখা ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপর রাকেশকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, ওই টাকা জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি মহিলা পর্চা সভাপতি দীপা বণিকের কাছ থেকে তিনি নিয়েছিলেন দলীয় কাজে ব্যবহারের জন্য। এরপর দীপা বণিকের কাছ থেকে আরও ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার খান্ডেবহালে উমেশ গণপত জানান, নিয়ম অনুযায়ী ভোটের সময় ৫০ হাজারের বেশি নগদ টাকা সঙ্গে কোনও ব্যক্তি সঙ্গে রাখলে তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হয়। তবে তাদের কাছে সেই নথি ছিল না। তাই তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ১০২ ধারা অনুযায়ী টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই ভোটের আগে বিজেপি নেতার কাছ থেকে এত টাকা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলের বক্তব্য, বিজেপি অন্যান্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে অথচ তারাই দুর্নীতি করে বেড়াচ্ছে। সাধারণ মানুষের টাকা আটকে রাখছে বিজেপি। আর ভোটের সময় টাকা দিয়ে ভোট কেনার স্বভাব রয়েছে তাদের। পাশাপাশি সিপিএমও বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে। তাদের বক্তব্য নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে টাকা ছড়িয়ে ভোটে জেতার কৌশল ঠিক করেছে বিজেপি। যদিও গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।