বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন অনুমোদনহীন মাদ্রাসাকে নথীভুক্তকরণের কথা। তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছড়িয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, তবে কী মাদ্রাসাগুলির পঠনপাঠনে রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করবে। বুধবার সাংবাদিক সম্মালনে বিষয়টি পরিষ্কার করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, অনুমোদনহীন মাদ্রাসাগুলিকে অধিগ্রহণ করবে না রাজ্য সরকার। তাদের সরকারি খাতায় নাম নথিভুক্তকরণের প্রস্তাব দেবে। নাম নথিভুক্তকরণের বিষয়টি সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক। এ ক্ষেত্রে কোনও জোর করা হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি,'খারেজি' মাদ্রাসাগুলি নথিভুক্ত হলে পড়ুয়ারা সরকারি পরিষেবা পাবে। এ ছাড়া রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির পড়ুয়ারা যেমন কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী-সহ অন্যান্য যে সরকারি সুবিধা পায়, সেই সব প্রকল্পের সুবিধা মাদ্রাসগুলি পাবে। সেই কারণে রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,' আমরা জানি এই মাদ্রাসাগুলোতে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয় এবং ইসলামী প্রতিষ্ঠানের নির্দেশিকা অনুসরণ করা হয়। আমরা তাদের সিলেবাস বা পাঠদান পদ্ধতিতে হস্তক্ষেপ করব না। আমরা এই মাদ্রাসাগুলিকে জিজ্ঞাসা করব, তারা সরকারি স্বীকৃতি পেতে চায় কিনা। কেউ এটাকে বেছে নিতে পারেন। অন্যরা নাও হতে পারে। স্বীকৃত খাদিজা মাদ্রাসার পড়ুয়ারা রাজ্যের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্পের অধীনে বিনামূল্যে সাইকেল, ট্যাবলেট, বৃত্তি পাবে।'
(পড়তে পারেন। কেন্দ্রীয় অত্যাচারের প্রতিবাদে প্রতি ব্লকে ধরনা হবে’, নবান্ন থেকে তারিখ ঘোষণা মমতার)
মঙ্গলবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''খারেজি' মাদ্রাসায় প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া রয়েছে। এগুলির উন্নয়নের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। শীঘ্রই শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্তা এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি তৈরি হবে। এই কমিটি সমীক্ষা করে ছমাসের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দেবে।'
বাংলায় বহু মাদ্রাসা রয়েছে যেগুলি স্বীকৃতিহীন। তাদের নথিভুক্ত করে সরকারি পরিষেবার দেওয়া ব্যবস্থা করতে চায় রাজ্য সরকার। তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক বলেই জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী অ-সাহায্যপ্রাপ্ত মাদ্রাসারও উল্লেখ করেন যেগুলি পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পাঠক্রম অনুসরণ করেন। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি সত্বেও এখনও নথিভক্ত করা সম্ভব হয়নি।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভার এই বক্তব্যের পর একে ‘ভোটের প্রতিশ্রুতি’ বলেই মন্তব্য করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলে,'সরকার অন্তত কেন্দ্রের টাকায় মিড ডে মিলটা দিতে পারে।' বিজেপির দাবি, বাংলায় মসুলিম জনসংখ্যা ৩৪ শতাংশের কাছাকাছি। তাই লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে সংখ্যালঘুদের কাছে টানতে এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন মমতা।