কয়লা মাফিয়া তথা বিজেপি নেতা রাজু ঝা-র মৃত্যু ঘিরে ক্রমেই রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাজু ছিলেন অনুব্রত ঘনিষ্ঠ আব্দুল লতিফের গাড়িতে। লতিফ নিজেও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। শক্তিগড়ে এক ল্যাংচার দোকানের সামনে গাড়িটি দাঁড়িয়ে ছিল। চালক সেই সময় বেরিয়ে কোথাও একটা গিয়েছিলেন। আর তখনই নীল গাড়িতে এসে ১৩ রাউন্ড গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। ঝাঁঝরা হয়ে যায় রাজুর দেহ। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, যে সাদা ফরচুনা (WB 48D 7032) গাড়িটি রাজু ছিলেন, তা আদতে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তথা গরুপাচার মামলায় 'ফেরার' আব্দুল লতিফ ওরফে হিঙ্গুর শেখের। এই আবহে পুলিশের এই মামলার 'মিসিং লিঙ্কে'র খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। (আরও পড়ুন: রেশন তোলার নিয়মে 'আমূল পরিবর্তন', রাজ্য সরকারকে 'বাইপাস' করে কী জানাল কেন্দ্র?)
ইতিমধ্যে, ফরচুনার চালক শেখ নূরকে আটক করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, অনুপ মাঝি ওরফে লালার সঙ্গে এককালে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল রাজুর। তবে বিগত কয়েক বছরে তাদের সম্পর্কে চিড় ধরেছিল। এই আবহে ২০২১ সালে রাজু যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। এই আবহে প্রশ্ন উঠেছে, সিবিআই-এর খাতায় ফেরার গরুপাচারকারী আব্দুল লতিফ বিজেপি নেতার সঙ্গে কী করছিলেন? জানা গিয়েছে, যে ফরচুনায় রাজুকে খুন করা হয়, সেটি ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে কেনা হয়েছিল। গাড়িটি ছিল লতিফের নামে। প্রশ্ন উঠেছে, রাজুর নিজের গাড়ি থাকা সত্ত্বেও লতিফের গাড়িতে কেন তিনি কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন? দাবি করা হয়, লতিফের সঙ্গে পার্টনারশিপে অবৈধ বালির ব্যবসায় জড়িেছিলেন রাজু। এই আবহে রাজু খুনের সঙ্গে গরু ও কয়লা পাচারকাণ্ডের যোগ রয়েছে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাওয়া আরও সহজ হল, বড় নিয়ম বদল করল রাজ্য সরকার
প্রসঙ্গত, বীরভূমের ইলামবাজারের গরুর হাট থেকে বাংলাদেশে কন্টেনারে করে গরু পাচার করা হত। বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত এই গরু পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল লতিফের ওপর। গরু পাচারকারী এনামুল হকের অন্যতম সঙ্গী হল এই লতিফ। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর থেকেই এই আব্দুল লতিফের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছিল সিবিআই। ইলামবাজারে গরুর হাট-সহ আব্দুল লতিফের বাড়ি, মার্বেল দোকানে তল্লাশি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। তবে লতিফকে ধরতে পারেননি গোয়েন্দারা। এহেন লতিফ এক বিজেপি নেতার সঙ্গে কী করছিলেন, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অনুব্রতর দেহরক্ষী সয়গল হোসেনের সঙ্গে এই লতিফের যোগ ছিল বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, লতিফ অনুব্রতরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এই আবহে অনুব্রতর গ্রেফতারির পর থেকেই লতিফের খোঁজ করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সিবিআই-এর দাবি, অনুব্রতর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে লতিফ সম্ভবত জড়িত ছিল।