রবিবার আলিপুরদুয়ার সফরে চা শ্রমিক ও আদিবাসীদের জন্য একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চা শ্রমিকদের দাবি মেনে দীর্ঘদিনের দাবি মেনে তাদের পাট্টা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে বাড়ি বানানোর জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে লোকসভা ভোটের আগে মুখ বাঁচানোর চেষ্টা বলে দাবি শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষের। তিনি বলেন, চা সুন্দরী প্রকল্পের বিপুল খরচ ঘাড় থেকে নামাতে বেআইনি কাজ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। সরল চা শ্রমিকদের বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন তিনি।
শংকরবাবু বলেন, ‘চা বাগানে পাট্টা দেওয়ার কোনও আইনি অধিকার রাজ্য সরকারের নেই। চা বাগানের জমি সরকারি জমি নয়। লিজের জমিতে পাট্টা দেওয়া বেআইনি। তাছাড়া চা শ্রমিকরা উদ্বাস্তু নন। তাঁরা হয় সেখানকার আদিবাসী, নইলে শ্রমিক হিসাবে স্বেচ্ছায় সেখানে এসেছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার কোনও নিয়ম নেই’।
শংকরবাবুর দাবি, ‘পাট্টা দেওয়ার নামে চা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে রাজ্য সরকার। তিনি বলেন, চা শ্রমিকরা যে যেখানে আছেন তাঁকে সেখানেই পাট্টা দেওয়া হবে কি না তা স্পষ্ট নয়। শোনা যাচ্ছে প্রত্যেক পরিবারকে ৫ ডেসিমেল করে জায়গা দেওয়া হবে। সেই জমি চা বাগানের ভিতরে না বাইরে তা স্পষ্ট নয়। সঙ্গে দেওয়া হবে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এই প্রকল্প চালু হলে চা সুন্দরী প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে’?
শংকরবাবু বলেন, ‘চা সুন্দরী প্রকল্পেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। প্রায় ৬ লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হলেও সরকারের বেঁধে দেওয়া মাপকাঠিতে বাড়ি তৈরি হয়নি। সেই দুর্নীতি ধামাচাপা দিতেই মাছের তেলে মাছ ভাজার পরিকল্পনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী’।
মমতাকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘এক তিরে তিন পাখি মারার মতলবে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতে চা শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার নাটকও করা গেল, আবার চা সুন্দরী প্রকল্প বন্ধ করে খরচ কমানো গেল, তাছাড়া চা মালিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া করে তাদের শ্রমিক কোয়ার্টারগুলি মেরামতির দায়িত্ব থেকে নিষ্কৃতিও দেওয়া গেল। সরকারের সঙ্গে চা বাগান মালিকদের কোনও সেটিং হয়েছে বলে আমরা খবর পাচ্ছি। গোটা বিষয়টা ক্রমশ প্রকাশ্যে আসবে’।
শংকরবাবু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ভেবেছেন সরল চা শ্রমিকদের বোকা বানাবেন। চা শ্রমিকরা সরল হতে পারেন কিন্তু বোকা নন। তাঁরা সব বোঝেন। তাই গত ১২ বছর তাঁদের ওপর সব রকমের অত্যাচার করেও তৃণমূল চা বাগানে ঢুকতে পারেনি। আর লোকসভা ভোটে তো প্রশ্নই নেই।