লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ৩৫ আসন জেতার কথা বলেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছিল। কেমন করে তা সম্ভব? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। আদি নেতারা বলছেন, যে কটা আসন আছে সে কটাও ধরে রাখা সম্ভব হবে না। কারণ দল যেভাবে চলছে তাতে মানুষের আস্থা মিলছে না। তাছাড়া সংগঠন একেবারেই নড়বড়ে। সেটা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে এবার বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধে অমিত শাহকে ভুল বোঝানোর নালিশ জমা পড়ল নয়াদিল্লিতে। আর সেখানেই জানিয়ে দেওয়া হল ৩৫ আসন বাংলা থেকে পাওয়ার পরিস্থিতি নেই বলে সূত্রের খবর।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? অমিত শাহকে ভুল বোঝাচ্ছেন বঙ্গ–বিজেপির কয়েকজন নেতা। এই অভিযোগ তুলে নালিশ জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। আর সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, গতবারের থেকে খারাপ পরিস্থিতি এখন। গোষ্ঠীকোন্দল, জনবিচ্ছিন্নতা মাথাচাড়া দিয়েছে। তাই কোনওমতেই ৩৫ আসন পাওয়ার জায়গায় বঙ্গ বিজেপি নেই। নয়াদিল্লিতে এসে এমনই নালিশ জানিয়ে গেলেন রাজ্য পার্টির দুই নেতা বলে সূত্রের খবর। তবে এই দুই নেতার নাম কেউ প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন না। এই খবর রাজ্য পার্টিতে গিয়ে পৌঁছেছে। তাতে আরও শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কিন্তু এ যেন কিল খেয়ে কিল হজম করার মতো অবস্থা। তাই মুখে সবাই কুলুপ এঁটেছেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? বীরভূমের মাটি থেকে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ বলেছিলেন, বিজেপি ৩৫ আসন পাবে। কিন্তু শাহর দাবি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় দলের অন্দরে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভুল বোঝানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন দলের একাংশ নেতারা। এমনকী এই অভিযোগের আঙুল উঠেছে রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কেন্দ্রীয় ও এক শীর্ষ রাজ্য নেতার বিরুদ্ধে। তাঁরাই দায়িত্ব নিয়ে নয়াদিল্লির নেতৃত্বকে ৩৫ আসন পাওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন। রাজ্য থেকে যে রিপোর্ট নয়াদিল্লিতে পাঠানো হচ্ছে তার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। মিথ্যা রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে বলে এক কেন্দ্রীয় নেতার কাছে নালিশ জানান ওই দুই রাজ্য নেতা। আর তাতেই ৩৫ আসনের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গিয়েছে।
কেন ৩৫ আসনের কথা বলেছেন শাহ? এই বিষয়ে এখন বঙ্গ–বিজেপির অন্দরেই জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। সরাসরি বিভক্ত হয়ে পড়েছে দু’পক্ষ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজ্য বিজেপি নেতা বলেন, ‘ওই সভায় ২৫ আসনের কথা বলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। অমিত শাহকেও সেই তথ্য জানানোর কথা ছিল। কিন্তু যিনি এটা তাঁকে জানানোর দায়িত্বে ছিলেন তিনি হিন্দি ঠিকঠাক জানেন না। তাই ২৫–এর জায়গায় ৩৫ বলে ফেলেন। তখন সেটা কেউ সংশোধন করেননি। তাই সভা থেকে এমন ব্যাপক আসন জেতার কথা বলেন অমিতজি। তারপর সেটাকেই বাস্তবে ফুটিয়ে তুলতে তৈরি হয় রিপোর্ট। যেটা বাস্তবসম্মত নয় বলে নালিশ জানানো হয়েছে।’ আগামী ৮ এবং ৯ মে রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ। মুর্শিদাবাদে সভা করতে পারেন।