Drowning Death: জলে ডুবে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি শিশু মৃত্যু হয় সুন্দরবনে

কাউকে কাউকে উদ্ধার করা গেলেও তার আত্মীয়রা হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে ওঝা-গুনিনের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন তাকে। ফলে কিছু ক্ষেত্রে সেখানেও মৃত্যু হচ্ছে শিশুদের।

জলে ডুবে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি শিশু মৃত্যু হয় সুন্দরবনে

চোখ কপালে ওঠার মতো তথ্য। পরিসংখ্যান বলছে পৃথিবীতে জলে ডুবে সবচেয়ে বেশি শিশুর মৃত্যু হয় পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে। বাড়ির লাগোয়া পুকুরে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে বেশিরভাগ শিশুর। পরিসংখ্যানে রয়েছে আরও আশঙ্কার বার্তা। অনেক সময় জীবিত অবস্থায় শিশুদের উদ্ধার করা গেলেও তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়না। নিয়ে যাওয়া হয় ওঝা-গুনিনের কাছে। সেখানেও মৃত্যু হয় অনেক শিশুর। 

পরিসংখ্যান বলছে উত্তর ২৪ পরগনার ৬টি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৩ ব্লক মিলিয়ে সুন্দরবনে জলে ডুবে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা পৃথিবীর সর্বোচ্চ। ২০১৬ সালের সালের অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের মোট ১৯টি ব্লকে সমীক্ষা চালানো হয়। সেই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, জলে ডুবে মৃত শিশুদের বেশিরভাগে বয়স চার বছরের মধ্যে। 

প্রতি এক লক্ষ জনংখ্যার মধ্যে ২৪৩ জন চার বছর বয়সি শিশুর মৃত্যু হয়েছে জলে ডুবে। অন্য দিনে ৩৯ জন পাঁচ থেকে নয় বছর বয়সি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। 

এই জলেডোবা রুখতে বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করে সুন্দরবন এলাকায়। সংগঠনের সদস্যরা জানাচ্ছেন, বাড়ির লাগোয়া পুকুরের ডুবেই সবচেয়ে বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের লোকজন যখন বাইরে কাজে ব্যস্ত থাকেন, সেই সময় খেলতে খেলতে শিশুরা পুকুরে কাছে চলে। কোনও  ভাবে পুকুরে পড়ে গেলেই ডুবে মৃত্যু হয়। কাউকে কাউকে উদ্ধার করা গেলেও তার আত্মীয়রা হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে ওঝা-গুনিনের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন তাকে। ফলে কিছু ক্ষেত্রে সেখানেও মৃত্যু হচ্ছে শিশুদের। 

সমাাধানের রাস্তা হিসাবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি মনে করছে, ছোট থেকে বাচ্চাদের সাঁতার শেখাতে হবে। তারা যাতে পুকুরের কাছে না যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে পুকুরের চারপাশ ভাল করে বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখতে হবে। 

জলে ডোবা শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের। যাতে তাঁরা জেলা ডোবা শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারেন। এছাড়া গ্রামে গ্রামে ‘চাইল্ড কেয়ার’ সেন্টার গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও জোর দেওয়া হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীরে মহিলাদের সেই ‘চাইল্ড কেয়ার’ সেন্টারের দায়িত্ব দেওয়া হবে। মা-বাবা কাজে চলে গেলে সেই চাইল্ড কেয়ার সেন্টারের শিশু রাখার ব্যবস্থা থাকবে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ নিয়ে মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে সংঙ্গে নিয়েই সেই কাজ হবে।