একটা সময় তিনি ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিশ্বস্ত’ সৈনিক। আর সেই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই মমতার তৈরি হয়েছে ‘দূরত্ব’। মুখে একে অপরের উদ্দেশে তেমন কেউ কিছু বলেননি। কিন্তু সবকিছু যে ‘ঠিক’ নেই, তা হাবেভাবেই স্পষ্ট। আর সেই ‘মতবিরোধ’ মিটিয়ে ফেলার জন্য রীতিমতো যজ্ঞ করলেন রায়গঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। তাঁদের একটাই প্রার্থনা - ‘আবার সবকিছু ঠিক হয়ে যাক’।
সোমবার রায়গঞ্জের দেবীনগর দেবপুরী এলাকায় যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অসীম অধিকারী। সেখানে মমতা এবং শুভেন্দুর ছবি সম্বলিত কাট-আউট রেখে চলে যজ্ঞ। ছিলেন কাউন্সিলরের অনুগামী-সহ তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। সেই ব্যানারে লেখা ছিল - 'দেবাদিদেব মহাদেবের কাছে বিশেষ প্রার্থনা। বাংলার অগ্নিকন্যা, শ্রীমতি মমতা ব্যানার্জীর একান্ত অনুগত সৈনিক, সকলের প্রিয় শ্রী শুভেন্দু অধিকারীর স্বমহিমায় দলীয় অবস্থানের জন্য দেবাদিদেব মহাদেবের কাছে (বিশেষ হোম যোজ্ঞের মধ্য দিয়ে) আমাদের একান্ত প্রার্থনা।'
তারইমধ্যে অবশ্য শুভেন্দুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা থামছে না। মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর গত রবিবার মহিষাদলে প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী রণজিৎ বয়ালের স্মরণসভায় হাজির ছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। সেই সভায় তৃণমূল নেতা বা প্রাক্তন মন্ত্রী হিসেবে শুভেন্দুর নাম রাখা হয়নি। বরং 'তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতি'-র সভাপতি হিসেবে ছিল শুভেন্দুর নাম। তুখোড় রাজনীতিবিদ সেই মঞ্চ থেকে অবশ্য কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করেননি। শুধুমাত্র জানিয়েছিলেন, গণতন্ত্রে মানুষ শেষ কথা বলেন। তিনি হচ্ছেন মানুষের ‘সেবক’।
শুভেন্দু জল্পনা উস্কে দিলেও প্রকাশ্যে প্রাক্তন পরিবহনমন্ত্রীকে নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি মমতা। নিজেকে সব জেলার ‘পর্যবেক্ষক’ বলেছিলেন। বরং বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় এখনও আশাবাদী, তৃণমূলেই থাকবেন শুভেন্দু। সেজন্য কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করছেন।