এবার বাংলার আসানসোল থেকে দিল্লি আদালতে সরে গেল গরুপাচার মামলা। আজ, বুধবার আসানসোল সিবিআই আদালত থেকে মামলা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে। আগে এই মামলা সরানো নিয়ে আদালতে ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কিন্তু বুধবার ইডির পেশ করা তথ্যে সন্তোষ প্রকাশ করে বিচারক মামলা সরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় অনুমোদন দেন। সুতরাং তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডল যে মামলায় গ্রেফতার সেই মামলার যাবতীয় শুনানি এবার দিল্লিতে হবে।
এদিকে আগেই ইডির পক্ষ থেকে এই মামলা দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য নানা চেষ্টা করা হয়েছিল। এবার তা নিয়ে যেতে সফল হল। আজ, বুধবার স্থানান্তরের আবেদন করা হয়েছিল। তাতে নানা যুক্তি দেখানো হয়েছিল। সবকিছু শোনার পর বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী মামলা দিল্লির আদালতে স্থানান্তরের পক্ষেই রায় দিলেন। অথচ গত ২ সেপ্টেম্বর শুনানি সময় বিচারক জানতে চান, আইনের কোথায় লেখা আছে যে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত একমাত্র ইডি করতে পারে? আর তা দিল্লিতেই করা যায়, কলকাতায় করা যায় না! তখন আর্থিক দুর্নীতির একাধিক ধারা উল্লেখ করে ইডি’র আইনজীবী বিচারককে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিচারক।
অন্যদিকে আজ, বুধবার ওই মামলার শুনানিতে ২০০৫ সালের জারি করা অর্থ মন্ত্রকের একটি বিজ্ঞপ্তিকে সামনে রেখে সওয়াল করে ইডি। ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্রের পেশ করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ৪৪/১সি ধারায় মামলা স্থানান্তর করা সম্ভব। সেই বিজ্ঞপ্তি দেখে, আদালতে ইডির পেশ করা তথ্যের ভিত্তিতে সন্তোষপ্রকাশ করেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। আর তার পরই গরুপাচার মামলা দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এখন তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। তাঁর মেয়ে সুকন্যায় বন্দি আছেন। এবার মামলাও দিল্লি গেল। তাহলে কি কেষ্টর চাপ বাড়ল? উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন শিশির অধিকারী, গাড়িতে হামলার বিচার চান
আর কী জানা যাচ্ছে? গরুপাচার মামলায় এখন তিহাড় জেলে অনুব্রত, সুকন্যা এবং সায়গল বন্দি আছেন। এমনকী আগেই গ্রেফতার হন এনামুল হক এবং বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমার। সুতরাং এই মামলা এবার দিল্লি চলে যাওয়ায় জেরার চাপ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সামনে দুর্গাপুজো। অনুব্রত মণ্ডল ভেবেছিলেন, জামিন মিলবে। সেখানে মামলাও দিল্লিতে চলে যাওয়ায় জামিন এখন বিশ বাঁও জলে। প্রথম দু’বার এই মামলা নিয়ে চাপে পড়েছিল ইডি। তবে তৃতীয়বারের শুনানিতে ইডির আর্জি মেনে নিল আদালত। আর অনুমতি দিল দিল্লি নিয়ে যেতে।