রাজনীতিবিদদের একাধিক গুণ থাকে। যেগুলি রাজনীতি করার আড়ালে লুপ্ত হয়ে যায়। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়ে দিয়েছেন রাজনীতি, প্রশাসন সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে বই লেখা, ছবি আঁকা, গানের সুর দেওয়া যায়। এমন অনেক রাজনীতিবিদদের মধ্যেই এমন গুপ্ত প্রতিভা থাকে। যা সহজে বিকশিত হয় না। কারণ রাজনীতি ও মানুষের সমস্যা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তা অগোচরেই থেকে যায়। তবে এবার শিল্পকলার মাধ্যমে আর একজন রাজনীতিবিদকে সমাজ নিয়ে বার্তা দিতে দেখা গিয়েছে। নাটকের মাধ্যমে সমাজকে বিশেষ বার্তা দিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের মহিলা রাজনীতিবিদ।
এদিকে এই রাজনীতিবিদ মহিলা এবং তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা পরিষদের সদস্য। তাই তাঁকে এমন রূপে দেখে সবাই আত্মহারা। চমকেছেন অনেকেই। রামনগরের নন্দিনী মেলায় ‘কালো মেয়ের কান্না’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। সেখানে অভিনয় করে সমাজকে বিশেষ বার্তা দেন জেলা পরিষদের সদস্যা শম্পা মহাপাত্র। জেলা পরিষদে কাজের সুবাদে তাঁকে প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলাতে হয়। তাই শম্পার দিন কাটে ব্যস্ততার মধ্যেই। তার সঙ্গে যাত্রা ও নাটকের মঞ্চে অভিনয় করে আরও ব্যস্ত থাকেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা পরিষদের সদস্যকে এমন ভূমিকায় এত কাছ থেকে দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই।
অন্যদিকে নারীরা যে সমাজ গঠনে এবং পরিবার গড়ে তোলার কাজে দক্ষ সে কথা তিনি অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। মা সবসময়ই সন্তানের কল্যাণে ব্রতী হন এটাই বোঝাতে চান তিনি। রামনগর জেলা পরিষদের সদস্যা শম্পা মহাপাত্র নিজের অভিনয় দিয়ে প্রশংসা অর্জন করেছেন জেলাস্তরে। তবে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দর্শক এবং নেতা–মন্ত্রীদের কাছে বাড়তি সমাদর পাচ্ছেন শম্পা। এভাবেই শম্পা মহাপাত্র জনসংযোগও করছেন। কখনও তিনি মা, কখনও তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের দিদি। আবার কখনও দক্ষ প্রশাসক। এই শম্পা মহাপাত্রকে নাটকের মঞ্চে দেখে সবাই বলছেন, সত্যিই আপনি পেরেছেন।
আরও পড়ুন: কালীঘাট মন্দিরের চূড়া ৫০ কিলো সোনায় মুড়ছে, রামমন্দিরের পাল্টা কি পীঠস্থান?
এখনও সমাজে নারীরা অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হন। মেয়ের গায়ের রং নিয়ে বধূকে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের অপমান সহ্য করতে হয়। এমন নানা ঘটনা সমাজের বুকে শুনতে পাওয়া যায়। ‘কালো মেয়ের কান্না’ নাটকে সমাজের সেই বাস্তব চিত্রকেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মঞ্চে। নন্দিনী মেলায় কয়েক হাজার দর্শকের সামনে মঞ্চস্থ হয় ‘কালো মেয়ের কান্না’ নাটকটি। যেখানে শম্পা মহাপাত্র বুঝিয়ে দিয়েছেন নারীর গায়ের রং দেখে বিচার করা ঠিক নয়। মন দেখে বিচার করতে হয়। এই নাটকের প্রশংসা করেছেন সকলেই। এই নাটক দেখতে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি। তিনি এই নাটক দেখে খুব খুশি হন। আর অখিল গিরি এই বিষয়ে বলেন, ‘অভিনয়ের মাধ্যমে সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। নাটক দেখে আমার খুবই ভাল লেগেছে। শম্পাও দারুণ অভিনয় করেছেন। ওঁকে আমার শুভেচ্ছা রইল।’ আর জেলা পরিষদ সদস্য শম্পা বলেন, ‘মেয়ের গায়ের রং কালো হলে সমাজ তাঁকে নীচু চোখে দেখে। কালো হলেও তাঁরা মানুষ, সব কাজে পরিপূর্ণ। এই বিশেষ বার্তা রয়েছে নাটকে।’