নিজের গাড়িতে চেপে যাচ্ছিলেন আত্মীয়ের বাড়ি। কিন্তু মাঝপথে গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন। তারপর বাকি রাস্তাটা গেলেন টোটো করে। যিনি এভাবে আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছলেন তিনি সাধারণ মানুষ নন। রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী। হ্যাঁ, জোৎস্না মান্ডি। কিন্তু নিজের গাড়ি থাকতে কেন টোটো সফর করলেন? উঠেছে প্রশ্ন। পরে জানা গিয়েছে, ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ির নাচন ভোগ করতে হয়েছিল মন্ত্রীকে। গাড়ি নানা দিকে হেলে পড়ছিল। আবার কখনও লাফিয়ে উঠছিল। বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে টোটোয় চেপে মন্ত্রী গেলেন আত্মীয়ের বাড়ি। পূর্ব বর্ধমানের রায়নার পলাশন পশ্চিম পাড়া এলাকায় এই ঘটনা দেখা দিয়েছে।
এদিকে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। রায়নার পশ্চিমপাড়া এলাকায় পৌঁছতে গেলে দুটি রাস্তা আছে। আর এই দুটি রাস্তাই ভেঙে পড়েছে। বেহাল দশায় থাকা রাস্তা দিয়ে যেতে মানুষজনকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আজ, শনিবার সকালে রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জোৎস্না মাণ্ডি রায়না পশ্চিমপাড়ায় মাসির বাড়িতে আসছিলেন। তাতেই তাঁর যা অভিজ্ঞতা হয়েছে তা প্রকাশ্যে বলার উপায় নেই। মাসির বাড়ি ঢোকার আগে মন্ত্রীর গাড়ি পড়ে বেহাল রাস্তায়। প্রায় ২০০ মিটার রাস্তা ভেঙেচুড়ে গিয়েছে। আর তার জেরেই গাড়ি থেকে নেমে মন্ত্রী উঠে পড়েন টোটো রিক্সাকে। টোটো করেই মাসির বাড়িতে যান মন্ত্রী।
অন্যদিকে এই দৃশ্য দেখে স্থানীয় মানুষজন দাঁড়িয়ে পড়েন। সবাই বোঝাতে চান দিনের পর দিন এভাবেই তাঁদের ভোগান্তি নিয়ে চলতে হয়। তবে এই বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলে মন্ত্রী সাফ জানালেন, কিছুটা রাস্তার কাজ এখনও বাকি আছে। বিষয়টি জেলাপরিষদ এবং পঞ্চায়েতে খোঁজ নিয়ে দেখবেন তিনি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন এই রাস্তা ভেঙে পড়ে রয়েছে। শীতকাল তো একরকম কাটে। কিন্তু বৃষ্টি হলেই ভোগান্তির শেষ থাকে না। অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত গ্রামের রাস্তায় ঢুকতে চায় না। গ্রামে কেউ অসুস্থ হলে খাটিয়া করে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তুলতে হয়।
আরও পড়ুন: ‘জায়গাটা ভালভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করুন’, বঙ্গভবন নিয়ে ফোঁস করলেন রাজ্যপাল বোস
তবে এই রাস্তার এমন হালের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত বা রাজ্য সরকার দায়ী নয়। কারণ এই পঞ্চায়েত সিপিএম পরিচালিত। আর তারা টাকা পেয়েও কাজ করেনি বলে অভিযোগ। মানুষকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে জিতলেও কাজ করছে না বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। এবার মন্ত্রীকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হওয়া নিয়ে শোরগোল পড়লে পঞ্চায়েতের প্রধান মনিকা কোনার পাল্টা বলেন, ‘আগে তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত ছিল। ওঁরা কাজ করেননি। আড়াই বছর কাজ হয়নি। আমরা ছয় মাস এসেই দুটি রাস্তার টেন্ডার ও ওয়ার্ক অডার করেছি। বৃষ্টির জন্য কাজ শুরু করা যায়নি। রাস্তা শুকোলেই কাজ শুরু করা হবে।’