শনিবার নয়াদিল্লি থেকে প্রথম দফার ১৯৫জন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করেছে বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এটা বড় খবর। এই তালিকায় বাংলার ২০ জনের নাম রয়েছে। সেই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান থাকার সময়ই বিজেপিতে যোগ দেন সৌমেন্দু। এবার কাঁথি থেকেই তাঁকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। শিশির অধিকারীর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েই এই লোকসভা কেন্দ্র নরেন্দ্র মোদীকে উপহার দেবেন তিনি বলে জানান। এবার শিশির অধিকারী সংবাদমাধ্যমে চাঁচাছোলা ভাষায় মুখ খুললেন তাঁর পুরনো দলের বিরুদ্ধে।
এদিকে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপির টিকিটে বিরোধী দলনেতা। সৌমেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিয়ে এখন লোকসভার টিকিট পেয়েছেন। বিজেপির হয়ে প্রচারে যাবেন শিশির অধিকারী। দিব্যেন্দু অধিকারী বিজেপির টিকিটে তমলুক থেকে প্রার্থী হবার সম্ভাবনা প্রবল। এই পরিস্থিতিতে পরিবারতন্ত্র আবার সামনে চলে এল। অথচ বিজেপি পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধেই কথা বলে থাকে। তবে শিশির অধিকারী বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। অমিত শাহের মিটিংয়ে গিয়েছি। আমার ৬০–৬২ বছরের রাজনৈতিক জীবন। কে আমাকে যোগদান করাবে? ওসব এখন পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।’
আরও পড়ুন: নরেন্দ্রপুর স্কুলে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় নয়া মোড়, গ্রেফতার করা হল প্রধান শিক্ষককে
অন্যদিকে অধিকারী পরিবার যে বিজেপির সঙ্গেই আছে সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বোঝাতে চেয়েছেন। সেক্ষেত্রে দিব্যেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে টিকিট পাবেন না এটা নিশ্চিত। তাছাড়া সুযোগ পেলে বিজেপিতে যোগ দেবেন এই কথা নিজে মুখেই বলেছিলেন তমলুকের সাংসদ। সেখানে শিশির অধিকারীর কথায়, ‘আমি আছি তো মোদীর সঙ্গে অমিত শাহের সঙ্গে। কে আমাকে যোগদান করাবে? আমার হাঁটুর বয়সি, আমার আঙ্গুলের বয়সি লোকগুলি আমাকে যোগদান করাবে নাকি! যেদিন শুভেন্দুবাবু বিজেপিতে চলে গেল সেদিন থেকেই বুঝে যাওয়া দরকার ছিল এই পরিবার মোদীর সঙ্গে চলে গিয়েছে। মিছিমিছি মিথ্যে মামলা, কলকাতার হাঁটুর বয়সি লোকগুলি দু’আনা এক’আনা এক দু’পয়সার লোকগুলিকে নিয়ে এসে মাইক লাগিয়ে বাপ বাপান্ত কটু কথা বলেছেন।’
এছাড়া সৌমেন্দুর জয় নিয়ে ১৬ আনা নিশ্চিত বাবা শিশির অধিকারী। তাঁর দাবি, ছেলের জয়ের ব্যবধান তাঁকেও ছাপিয়ে যাবে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীকে ১ লক্ষ ১১ হাজার ৬৬৮ ভোটে পরাজিত করেছিলেন শিশিরবাবু। এখন তাঁর বক্তব্য, ‘লিখে রাখুন, সৌমেন্দুর জয়ের ব্যবধান অন্তত ৩ লাখ হবে। কাঁথি থেকে ওই জিতবে। সৌমেন্দু প্রার্থী হয়েছে পরিবারের গর্বের বিষয়। যোগ্য প্রার্থী। ছেলের জন্য, বিজেপির হয়ে হান্ড্রেড পারসেন্ট সময় দেব। কাঁথি, কলকাতা, দিল্লির অফিস ভাল করে জানে সৌমেন্দু। কোথায় কী করতে হয় কোথায় কী ভাবে যোগাযোগ করতে হয় সবটাই জানে। পার্টি দীর্ঘদিন ধরে করছে। জেলার সাধারণ সম্পাদক। নতুন লোক একটা পার্লামেন্টে পৌঁছে দরজা চিনতে ১০ বছর লাগে। ওর কাছে দিল্লির দরজা চিনতে ১০ মিনিটও লাগবে না। কাঁথির সমস্যা, জেলার সমস্যা, বাংলার সমস্যা ও ভালো করে জানে, সবটাই জানে বোঝে। সৌমেন্দুর উপর অনেক অত্যাচার করেছে।’