নরেন্দ্রপুরের বলরামপুর মন্মথনাথ বিদ্যামন্দিরে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনার কথা সবার সামনে চলে আসে। এই ঘটনা নিয়ে যথেষ্ট আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল রাজ্যে। এবার সেই ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই গ্রেফতারের ঘটনায় খুশি পড়ুয়া, অভিভাবক এবং সাধারণ মানুষ। কারণ শিক্ষক এমন অত্যাচার করতে পারেন তা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল সকলের। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার সাদার্ন বাইপাসের এলাচি এলাকা থেকে ওই প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে গত ২৭ জানুয়ারি বলরামপুর মন্মথনাথ বিদ্যামন্দিরে ঢুকে একদল দুষ্কৃতী হঠাৎ শিক্ষক–শিক্ষিকাদের বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর নিগৃহীত শিক্ষকদের অভিযোগ ছিল, প্রধান শিক্ষকের মদতে একদল দুষ্কৃতী স্কুলে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে। আসলে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নানা দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার প্রেক্ষিতেই এই হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। প্রধান শিক্ষক তখন পাল্টা দাবি করেন, স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠায় এলাকার মানুষজনই বিক্ষোভ দেখান। তবে শেষ পর্যন্ত ওই অভিযোগ ধোপে টেকেনি।
আরও পড়ুন: নেশামুক্তি কেন্দ্রে প্রচণ্ড মারধর করার অভিযোগ, নরক যন্ত্রণায় ভুগছেন যুবক, থানায় পরিবার
অন্যদিকে সত্যি বেরিয়ে আসায় শিক্ষকরা একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখান। প্রতিবাদ করেন। তখন প্রধান শিক্ষক–সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সহকারী শিক্ষকরা। তারপর মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এবার প্রধান শিক্ষকের গ্রেফতারের পরে ধৃতদের মোট সংখ্যা দাঁড়াল ৯। এখানে কয়েকজন আরও রয়েছে। তবে বনহুগলি–২ পঞ্চায়েতের সদস্য তথা তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা আকবর আলি খানকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। এফআইআর–এ নাম আছে।
এছাড়া পুলিশ সূত্রে খবর, এই হামলার ঘটনার পর থেকে নানা জায়গায় গা–ঢাকা দিয়ে বেড়াচ্ছিলেন প্রধান শিক্ষক। জেলার নানা জায়গা থেকে শুরু করে জেলার বাইরেও ছিলেন। এবার তিনি এলাচি এলাকায় আসবেন বলে গোপন সূত্রে খবর পায় পুলিশ। তার পর এখানে আসতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। নরেন্দ্রপুর থানার আইসি সুরিন্দর সিং জানান, আর এক অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। এই ঘটনা নিয়ে জেলায় তথা গোটা রাজ্যে চর্চা শুরু হয়েছিল।