আর কোনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না শিলিগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তথা বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এক প্রশ্নের উত্তরে খোলাখুলি এই কথা জানিয়ে দেন তিনি। যা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ মন্ত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। তারপর এদিন অশোকবাবুর এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আসতেই অনেকে বলতে শুরু করেন, শিলিগুড়ির সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে গিয়েছে।
এমনকী চায়ের দোকানে চর্চায় উঠে এসেছে, তাঁর পক্ষে আর কোনও নির্বাচনেই জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। আর এটা বর্ষীয়ান নেতা নিজেও বুঝতে পেরেছেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে অশোক ভট্টাচার্য তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছেন। তাঁর জামানত জব্দ হয়েছে। এমনকী নিজের ৬ নম্বর ওয়ার্ডেও তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছেন তিনি। যদিও অশোকবাবুর দাবি, ‘আমি এবার প্রার্থী হওয়ার পরই ঘোষণা করেছিলাম এটা হবে আমার শেষ নির্বাচন। এটার সঙ্গে ফলাফলের কোনও যোগ নেই। এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’
তবে অশোকবাবু যদি আর না নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাহলে তাঁকে বাইরে রেখেই এবার শিলিগুড়ি পুরসভা নির্বাচনে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে সিপিআইএম তথা বামফ্রন্টকে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা। প্রশ্ন উঠছে, নতুন নেতৃত্ব তুলে আনার জন্যই কি এই সিদ্ধান্ত? অশোকবাবুর জবাব, ‘আমাদের দল নিয়ে যাঁরা এসব কথা বলছেন তাঁদের এবারের সব দলের প্রার্থী তালিকা দেখা উচিত। কারণ আমরাই একমাত্র দল যাদের ৮০ জন প্রার্থীর বয়স অনুর্ধ্ব ৩৩ বছর। এটা কি তরুণ নেতৃত্ব তুলে আনা নয়? যা অন্য কোনও দলে হয়নি।’
একুশের নির্বাচন ও তার ফলাফল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দলকে ঘুরে দাঁড় করাতে আমি অবশ্যই লড়াই করব। নেতৃত্ব দেবো। আর শিলিগুড়ি পুরসভা ও মহকুমা পরিষদ নির্বাচনে বামফ্রন্টের লড়াইয়ে আমি সামনে থাকব। তবে এক্ষেত্রে আমার ভূমিকা হবে ‘নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন’। মাঠের বাইরে থেকে নেতৃত্ব দেবো। কিন্তু খেলব না। শিলিগুড়ি পুরসভা ও মহকুমা পরিষদ আমাদের ধরে রাখতেই হবে।’ যদিও এটাকে খেলব হোলি রং দেবো না গোছের মন্তব্য বলে মনে করছেন অনেকে।