বাংলায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আওয়াজ তুলেছেন বিজেপির নেতা–মন্ত্রীরা। আর মামলা হওয়ার জেরে অনেকের চাকরি গিয়েছে। আবার অনেকের চাকরি আটকে আছে। এই আবহে এবার বিস্ফোরক তথ্য দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি একসময় রেলমন্ত্রী ছিলেন। তখন তাঁর চোখে রেলের চাকরিতে দুর্নীতি ধরা পড়ে। কিন্তু তিনি পদক্ষেপ করেননি। কারণ যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁরা বেকার হয়ে যাবেন। দেশে বেকার বাড়ুক চাননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই যুক্তিতে রাজ্যে নিয়োগ নিয়ে মামলা না করার আবেদন করেছেন। বিরোধীদের মামলার জেরেই চাকরি আটকে যাচ্ছে। নিয়োগ করা যাচ্ছে না বলে তাঁর অভিযোগ।
এদিকে রাজ্যে সরকারি চাকরিতে পাঁচ লাখ নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা এখন রাস্তায় বসে আছেন তাঁদের চাকরি আটকে গিয়েছে মামলার জেরেই। রাজ্য সরকার চাকরি দিতে চাইলেও পারছে না বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘রেলের কত দুর্নীতি ধরতে পারতাম। ধরিনি, কারণ একটাই। পেয়েছে তো চাকরি, পাক। চাকরিটা তো পাক। আর এই বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের মামলার জেরে চাকরি আটকে আছে। একটু মায়া–দয়া নেই? বেকার যুবক–যুবতীদের ভবিষ্যৎ নষ্টের জন্য চাকরি আটকাবেন না।’
অন্যদিকে শিক্ষা, দমকল, পুলিশ–সহ নানা ক্ষেত্রে শূন্যপদ রয়েছে। সেখানে নিয়োগ করতে চায় রাজ্য সরকার। আর বিরোধীরা টুক করে একটা মামলা ঠুকে দিচ্ছে। আর আটকে যাচ্ছে নিয়োগ বলে দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আরামবাগের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার তৈরি হচ্ছে শিল্প। চার পাশে চাকরি চাই, চাকরি! প্রায় এক লাখ শিক্ষক নিয়োগ হবে। অন্য দফতরেও হবে। কোর্টে যে কেউ যেতে পারে। মায়া–দয়া নেই। বেকার যুবক–যুবতীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে চাকরি আটকাবেন না। মামলা করে চাকরি আটকে আবার বলে দেখলে কেমন আটকে দিলাম। এটাই এদের চরিত্র। চাকরি পেলে একটি পরিবার একটু ভাল থাকতে পারে।’
আরও পড়ুন: ভেঙে ফেলা হচ্ছে শহরের প্রাণকেন্দ্রের এলিট সিনেমা হল, ওই জায়গায় কী হবে?
এছাড়া শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আইনি লড়াইয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিশেষ তৎপরতা দেখান সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। মামলা করে নিয়োগে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস বারবারই করেছে এবং কাঠগড়ায় তুলেছে সিপিএমকে। হুগলির আরামবাগের প্রশাসনিক সভায় কারও নাম না করলেও মুখ্যমন্ত্রী আবার বলেন, ‘এত শিক্ষক নেওয়া হবে, পদ খালি আছে, আপনাদের জন্য নিতে পারছি না। কিছু শকুনি বসে রয়েছে! যেই একটু এগোচ্ছি, অমনি টুক করে একটা মামলা ঠুকে দিচ্ছে। আর হাসতে হাসতে বলছে, চাকরিটা করতে দেব না।’ এই কাজকেও ‘বড় দুর্নীতি’ বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।