নানা বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর গলায় আক্ষেপের সুর ধরা পড়ল এবার। বিশ্বভারতী নিয়েই আক্ষেপ করে বসলেন খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে শান্তিনিকেতন নিয়ে কেন্দ্র–রাজ্য রাজনীতি চলছেই। উপচার্য তাঁর একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জেরে রাজ্য সরকারের রোষের মুখে পড়েছেন। এবার নিজের মুখেই স্বীকার করলেন গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারেননি তিনি।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তন, আদর্শের ফলাফল বিশ্বভারতী তথা শান্তিনিকেতন। কিন্তু বিশ্বভারতীর আশ্রমিক, পড়ুয়া, প্রাক্তনী থেকে শিক্ষামহলের একটা বড় অংশের অভিযোগ, সেই চিন্তন বা আদর্শ হারিয়ে গিয়েছে বিশ্বভারতী থেকে। এবার সেই একই সুর উপাচার্যের গলায়। রবিবার রামকিঙ্কর মঞ্চে ‘ভুল রাস্তা’ শীর্ষক একটি নাটকের শেষে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘বিশ্বভারতী আমাদের সকলের। এ কথা আমি বরাবরই বলে এসেছি। আমাদের সকলের দায়িত্ব, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে ঐতিহ্য রেখে গিয়েছেন তা রক্ষা করা। কিন্তু আমরা কি সেই দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে? পারিনি। রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীকে ধরে রাখতে পারিনি। তাই তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর একটা বড় দায়িত্ব রয়ে গেল।’
সম্প্রতি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রাখার অভিযোগকে ঘিরে বিতর্কে জড়ান বিশ্বভারতীর উপাচার্য। পৌষমেলার মাঠ থেকে ক্যাম্পাসের চারিদিকে পাঁচিল তোলা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ঝামেলা চলছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। সম্প্রতি বোলপুরে নির্বাচনী সভা করতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁদের সঙ্গে উপাচার্যের সাক্ষাৎ নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত একটা বড় অংশের অভিযোগ, বিশ্বভারতীর ওপর রাজনীতির যে কালো ছায়া নেমে এসেছে তার নেপথ্যে রয়েছে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। যে কারণে বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য, আদর্শের ক্ষতি হচ্ছে। এবার একই সুর খোদ উপচার্যের গলায়।