বাড়ির উঠোন ভাসছে রক্তে। কারণ সেখানে পড়ে আছে পরিবারের এক সদস্যের দেহ। আর বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতেই চমকে ওঠা দৃশ্য। আরও দু’জনের দেহ পড়ে আছে। ভরদুপুরে একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার রেলপার্ক সারদাপল্লিতে তুমুল আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ল। এই মৃতদেহগুলি উদ্ধারের আগে হেলমেট পরা এক ব্যক্তিকে বাড়িতে ঢুকতে দেখেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কে ওই ব্যক্তি? তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তিনজনেরই রক্তাক্ত দেহ মেলে ওই বাড়ি থেকে। এই তিনজনের মধ্যে একজন বৃদ্ধা, একজন তরুণ ও তরুণী আছেন। তাঁরা সম্পর্কে ভাই–বোন। ওই বৃদ্ধা তাঁদের ঠাকুমা।
আর পাঁচদিন পর ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। তার আগে ভাই–বোনের সঙ্গে ঠাকুমার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার নিয়ে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কাঁকসার বাসিন্দা ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মা এখানে স্ত্রী এবং মেয়ে সিমরানকে নিয়ে থাকতেন। পেশায় তিনি কর্মকার। কয়েকদিন আগে সস্ত্রীক ধনঞ্জয় অসমে যান আত্মীয়ের বাড়িতে। মেয়ে সিমরান ছিলেন নিজের বাড়িতে। তখন বাড়িতে থাকেন ঠাকুমা সীতাদেবী এবং তরুণ সোনু বিশ্বকর্মা, তরুণী সিমরান। আজ, শুক্রবার দেখা যায় বাড়ির উঠোনে পড়ে রয়েছে তাঁদের রক্তাক্ত দেহ। এদের মধ্যে দুজনের গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। যা নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, বৃদ্ধার নাম সীতা দেবী (৭০)। বাকি দুই তরুণ–তরুণীর নাম সিমরন বিশ্বকর্মা (২৩) ও সোনু বিশ্বর্কমা (২২)। আজ শুক্রবার বাড়ির বাইরে সোনুর রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে বাড়ির ভিতরে গিয়ে দেখেন একটি ঘরে সীতা দেবীও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। পাশের ঘরে পড়ে রয়েছে সিমরনের দেহ। তড়িঘড়ি আসে কাঁকসা থানার পুলিশ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে এলাকা ঘিরে ফেলে। তিনটি মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ডেকে পাঠানো হয় ফরেনসিক টিমকেও। তারা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কাঁধের নীচ থেকে হাত উড়ে গেল যুবকের, পানিহাটিতে বোমা বিস্ফোরণে আলোড়ন
আর কী জানা যাচ্ছে? এই তিনটি খুন বলেই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও পুলিশ অপেক্ষা করছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য। বাড়িতে কে এসেছিল? এটাই এখন খুঁজছে পুলিশ। কেন খুন করা হল? তাহলে কি পারিবারিক শত্রুতা থেকে খুন? উত্তর খুঁজতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। মাথায় হেলমেট পরা অবস্থায় ওই ব্যক্তির তল্লাশি শুরু হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় ভাবাচ্ছে পুলিশকে। পরিচিত না হলে বাড়িতে ঢুকতে পারতেন না ওই ব্যক্তি। কাঁকসা থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেনসিক দলও।