উঠোনে পড়ে রয়েছে স্বামীর অর্ধদগ্ধ দেহ। তার পাশে বসে হাউ হাউ করে কাঁদছেন স্ত্রী। সাতসকালে এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আৎকে উঠলেও সন্দেহের দানা বেঁধেছিল প্রতিবেশীদের মনে। কীভাবে ওই ব্যক্তি আচমকা অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেলেন, তাঁর স্ত্রীর কাছে কোনও সদুত্তর না পেয়ে সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। স্ত্রীর কান্নাতেও মন গলেনি পড়শিদের। খবর দেওয়া হয় নবদ্বীপ থানায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইদানিং পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ওই বধূ। ‘পথের কাঁটা’ সরাতেই স্বামীকে পুড়িয়ে মেরেছে সে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম সুশান্ত ঘোষ(৩৮)। তাঁর দেহের অধিকাংশটাই পুড়ে গিয়েছে। কীভাবে তিনি অগ্নিদগ্ধ হলেন, তা জানতে দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার সকালে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার নবদ্বীপের রুদ্রপাড়া এলাকায়। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী মল্লিকা ঘোষের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নবদ্বীপের পালপাড়া বাজার সংলগ্ন রুদ্রপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন পেশায় পুতুল বিক্রেতা সুশান্ত। তাঁর সঙ্গে ১১ বছর আগে মল্লিকার বিয়ে হয়। দম্পতির ৮ বছরের কন্যাসন্তানও রয়েছে।
প্রতিবেশীদের দাবি, প্রায়ই দু’জনের মধ্যে কোনও গুরুতর কারণ ছাড়াই ঝগড়া হত। কখনও সুশান্তর কম আয়ের জন্য কখনও বা কোনও সামান্য কারণে ঝগড়া বাঁধাতেন মল্লিকাই। এমনকী, সুশান্তকে মেরে ফেলার পর্যন্ত হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের। তাঁদের আরও দাবি, সম্প্রতি বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েছিলেন মল্লিকা। সে কারণেই ‘পথের কাঁটা’ সরাতে সুশান্তকে পুড়িয়ে মেরেছে সে। পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্বামীর অর্ধদগ্ধ দেহ উঠনে রেখে কান্নাকাটির নাটক করছিলেন মল্লিকা।