মাএ ৭ দিনে রোগীর পরিবারকে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার বিল ধরানোর অভিযোগ উঠেছিল বেহালার বেসরকারি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। রোগীর প্রদেয় অর্থের প্রায় ৭০ শতাংশ টাকা অর্থাৎ ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। সম্প্রতি এই নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়।
একইসঙ্গে কমিশন জানায়, ওই নার্সিংহোম ৭ দিনে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বিল হয়েছে। কিন্তু দিনে ১০ হাজার টাকার বেশি বিল হতে পারে না। সেই মতো মোট ২ লাখ ১০ হাজার টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
অন্য আরেক রোগীর ক্ষেত্রেও টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে সোডিয়াম পটাশিয়ামের সমস্যা নিয়ে একদিনের জন্য ভরতি ছিলেন ওই রোগী। তার জন্য ৫০ হাজার টাকার বিল ধরানো হয় বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে ৪০ হাজার টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোগীর পরিবারকে ৭ দিনে এই বিপুল পরিমাণের টাকার বিল ধরিয়েছিল বেহালার অ্যাপেক্স নার্সিংহোম। তার মধ্যে থেকে এবার ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা রোগীর পরিবারকে ফিরিয়ে দিতে হবে অভিযুক্ত নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে। এমনটাই কড়া নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন।
এদিন মামলা চলাকালীন ক্ষোভ প্রকাশ করে অসীমবাবু বলেন, ' ভেলোরের হাসপাতালগুলোতে এত ভিড় হয় কেন? এর একটাই উত্তর, হাসপাতালের বিলের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত।'
এমনই এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের সব বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে তামিলনাড়ুর ভেলোর খ্রিশ্চান মেডিক্যাল কলেজের বিল খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। বলা হয়েছে, কীভাবে কম খরচে চিকিৎসা করা যায়, তা যেন দেখে বেসরকারি হাসপাতালগুলো।
মামলার বয়ান অনু্যায়ী জানা গিয়েছে, বাইক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন ব্যারাকপুরের বাসিন্দা বিকাশচন্দ্র মন্ডল। তড়িঘড়ি তাকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। সেখানে ১০ দিন ভরতি থাকার পর বিকাশবাবুর পরিবারকে ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকার বিল ধরানো হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
কমিশন জানায়, ভেলোরের খ্রিশ্চান মেডিক্যাল কলেজের বিল যেখানে ১৯ দিনে ১ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা। সেখানে কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতাল শুধুমাত্র পায়ের প্লাস্টার, ড্রেসিং, তুলোর খরচই ধরেছিল ১ লক্ষ টাকা!
এমনকী, দুর্ঘটনায় বিকাশবাবুর পা বাদ দেওয়ার আশঙ্কার কথা শোনায় ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অথচ ক্ষতিগ্রস্থ পা-ও বাদ দিতে হয়নি।
এরপর ওই বেসরকারি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের বিল ধরানোর অভিযোগে, স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হন রোগীর পরিবার। এরপর সব পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সিংহভাগ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয় কমিশন।