করোনার জেরে বছর দেড়েকের উপর বন্ধ রয়েছে স্কুল। তার মাঝেই বাংলার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে আম্ফান ও ইয়াসের মতো বিধ্বংসী ঝড়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক স্কুল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে, পুজোর পর স্কুল খোলা হবে। এবার সেই উদ্যোগ নিল স্কুল শিক্ষা দফতর। স্কুল খোলার তোড়জোড় শুরু করল তারা। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে আপাতত পড়ুয়াদের আধার কার্ড নথিভূক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।
র সমস্ত জেলার স্কুল পরিদর্শকদের এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। পাশাপাশি স্কুলগুলোর মেরামতির অর্থ বরাদ্দের জন্য বাংলার শিক্ষা পোর্টাল স্কুলগুলোর কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, অক্টোবরের প্রথম দিন থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। মূলত নবম ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য ১, 8, ৫, ৭ ও ৮ অক্টোবরে আধার কার্ড নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলবে। স্কুল শিক্ষা দফতরের সচিব জানিয়েছেন, আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রক্রিয়া চালানো হবে, তবে পুজোর পর সম্পূর্ণভাবে পড়ুয়াদের আধার নথিভুক্তিকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।
অন্য দিকে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলোর আর্থিক সাহায্যের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। উচ্চ প্রাথমিকের জন্য দু'লক্ষ টাকা ও প্রাথমিকের জন্য দেড় লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের স্কুলগুলোতে সেই টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও স্কুলের কোনও চেয়ার ভেঙে গেলে, তা সরাই করতে ভাঙা চেয়ার প্রতি হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। টেবিল ভেঙে গেলে, তা সারাই করতে ২ হাজার টাকা করে পাবে স্কুল। প্রত্যেকটি ভাঙা বেঞ্চের জন্য স্কুল পাবে আড়াই হাজার টাকা করে। স্কুলচত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্যানিটেশনের জন্য পৃথক ভাবে টাকা দেওয়া হবে।
সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের জন্য ৫ হাজার এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হবে।
শুধু তাই না, কোনও স্কুলের মিড ডে মিলের রান্নাঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলে, সেটা মেরামত করার জন্য স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাইতে পারবে স্কুল। এমনকী,পানীয় জলের সাবমারসিবল বা হ্যান্ড পাম্প বিকল হলে, তার জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করতে পারবে স্কুল। এছাড়াও শৌচালয় পরিষ্কার অথবা সংস্কার করার জন্য ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হবে। এমনকী, স্কুলগুলোর বৈদ্যুতিন সংস্কারের প্রয়োজন পড়লে, সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করবে স্কুল শিক্ষা দফতর। যে স্কুলের যা যা সংস্কারের প্রয়োজন হবে, বাংলার শিক্ষা পোর্টাল, সংশ্লিষ্ট সমস্ত তথ্য পূরণ করে ছবি-সহ আপলোড করতে হবে স্কুলগুলোকে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দেড় বছরের উপর স্কুলগুলো বন্ধ থাকার কারণে স্কুলের অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো লড়ঝড়ে হয়ে গিয়েছে। তাই সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করবে রাজ্য সরকার।