অয়নের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের রহস্যজনক কিছু লেনদেন থেকে এমন সব তথ্য মিলেছে বলে সূত্রের খবর। গ্ল্যামার জগতের এই তরুণীদের মাধ্যমে বেনামে কোনও সম্পত্তি এই প্রোমোটার প্রযোজক কিনেছিলেন কি না সেটার খোঁজখবর শুরু করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। হুগলির গুড়াপে অয়নের পেট্রোল পাম্পের হদিশ পেয়েছে ইডি।
ধৃত প্রোমোটার অয়ন শীল। হলুদ গেঞ্জি পরা।
শুধু শ্বেতা চক্রবর্তী নয়, নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অয়ন শীলের একাধিক ‘গার্লফ্রেন্ড’–এর খোঁজ মিলছে। যাঁরা প্রত্যেকেই টলিপাড়ার পরিচিত মুখ। এই প্রোমোটার–প্রযোজক নানা সময়ে তাঁদের দামি গাড়ি, ফ্ল্যাট এবং বিভিন্ন ধরনের উপহার দিয়েছেন। তদন্তে এমন তথ্যই উঠে এসেছে বলে ইডি’র দাবি। তাই ইডি’র আতসকাচে অয়ন শীল এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তী–সহ আত্মীয়দের ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। নিয়োগ নিয়ে কেউ আপত্তি তুললে এক মন্ত্রীকে দিয়ে ফোন করানো হতো বলেও তথ্য পেয়েছেন ইডির অফিসাররা।
ঠিক কী তথ্য পেয়েছে ইডি? ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ নিয়ে কোনও আধিকারিক আপত্তি তুললে তাঁকে ঠাণ্ডা করতে এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর ফোন ধরিয়ে দেওয়া হতো। এটা বেশি হয়েছে পুরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রে। তেমন কিছু নথিও হাতে এসেছে অফিসারদের। এমনকী অনেক সময় বার্তা আসত চিরকুটের মাধ্যমে। এই রাস্তায় খুঁজে পেয়েছিল বলেই বহু পুরসভায় অয়নের সংস্থা পরপর দু’বার নিয়োগের নামে দুর্নীতি চালাতে পেরেছিল। ২০১৭ সালে উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক পুরসভায় কর্মী নিয়োগের দরকার পড়ে। তখন পরিকাঠামোর অভাবে হুগলির সংস্থা এবিএস ইনফোজোনের নাম কৌশলে পৌঁছে দেওয়া হয়। এটাই অয়নের সংস্থা।
আর কী তথ্য উঠে এসেছে? অয়নের সংস্থা এবিএস ইনফোজোন প্রাইভেট লিমিটেডের নামে দুটি অ্যাকাউন্ট এবং হুগলিতে অয়নের পেট্রোল পাম্পের নামে তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে। ইডি’র সিজার লিস্টে এই অ্যাকাউন্টগুলির উল্লেখ রয়েছে। এখন সেখানে লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অয়নের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের রহস্যজনক কিছু লেনদেন থেকে এমন সব তথ্য মিলেছে বলে সূত্রের খবর। গ্ল্যামার জগতের এই তরুণীদের মাধ্যমে বেনামে কোনও সম্পত্তি এই প্রোমোটার প্রযোজক কিনেছিলেন কি না সেটার খোঁজখবর শুরু করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। হুগলির গুড়াপে অয়নের পেট্রোল পাম্পের হদিশ পেয়েছে ইডি।
আর কারা জড়িত রয়েছে? ইডি সূত্রে খবর, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে গুড়াপে শুক্লা সার্ভিস স্টেশন চালান অয়নের ছেলে অভিষেক শীল। এই পাম্পের পার্টনার ইমন গঙ্গোপাধ্যায়। যিনি অভিষেকের ছেলের বান্ধবী। এখানের ব্যবসার টাকা অভিষেকের বান্ধবী ইমনের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। টালিগঞ্জে যাতায়াতের সুবাদে চার–পাঁচজন ‘লাস্যময়ী’র ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন অয়ন। আসলে এই প্রোমোটার সুন্দরীদের সঙ্গ নিতে পছন্দ করতেন। তাই অল্পবয়সি নায়িকাদের প্রতি তাঁর আকর্ষণ তৈরি হয়। এই চার–পাঁচজনকে নিয়ে তিনি প্রায়ই পাঁচতারা হোটেলে যেতেন খাওয়াদাওয়া করতে। বিভিন্ন ক্লাবে পার্টি করতেন তাঁদের সঙ্গে। এমনকী সল্টলেকে ভাড়ার ফ্ল্যাটে নিয়ে এসেও মোচ্ছব করেছেন নায়িকাদের নিয়ে।