কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের অপসারণ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান তথা বজবজের তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেব। কিন্তু সোমবার রাজ্য বার কাউন্সিলের একাংশের তরফে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্নাকে জানানো হয়, চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাঁরা একমত নন। পাল্টা চিঠিও দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে। ফলে হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অপসারণ প্রশ্নে রাজ্য বার কাউন্সিলের মধ্যেই বিভাজন স্পষ্ট হল।
সোমবার বার কাউন্সিলের ৪ সদস্য কৈলাস তামোলি, সমীর পাল, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ও মিহির দাস সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে আলাদা করে চিঠি দেন। সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের অপসারণ চেয়ে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সাক্ষরিত যে চিঠি গিয়েছে, তা আসল বিষয়টি থেকে অনেক বেশি ঘৃণাপূর্ণ ও জটিল। চিঠিটি হাস্যকর ও বার কাউন্সিলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যই তাতে একমত নন।’ সেইসঙ্গে চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ওই চিঠির সঙ্গে বার কাউন্সিলের কোনও সম্পর্কই নেই। অশোক কাউন্সিলের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এই চিঠি পাঠিয়েছেন। বার কাউন্সিলের লেটারহেডে এই চিঠি পাঠানোর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনও বিচারপতির অপসারণ চেয়ে চিঠি দেওয়ার কোনও এক্তিয়ারই নেই বার কাউন্সিলের। কিছু পদাধিকারী তৃণমূলের হাতের পুতুল হয়ে বার কাউন্সিলকে দলীয় কার্যালয় বানিয়ে দিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে আইনজীবী সমীর পাল জানান, বার কাউন্সিলের কোনও লেটারহেডে অশোক স্তম্ভ থাকতে পারে না। চেয়ারম্যান সেটা করেছেন। বিধায়ক হিসাবে উনি সেটা করতে পারেন। কিন্তু বার কাউন্সিলের সদস্য হিসাবে এটা তিনি করতে পারেন না। এটা প্রথম ভুল। একইসঙ্গে তিনি জানান, উনি একটি দলের হয়ে কাজ করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের আইনজীবীর ভোটে জিতেছেন তিনি। ওঁর ক্ষমতাশালীর কথা শুনে চলার কথা নয়। ওঁর চিঠি প্রত্যাহার করা উচিত।
উল্লেখ্য, গতকাল হাই কোর্টের ভার প্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির অপসারণ করে ৬ পাতার একটি চিঠি দিয়েছিলেন বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অশোক দেব। চিঠিতে তাঁর অভিযোগ ছিল, নারদ মামলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ভূমিকা তেমন সন্তোষজনক নয়। পাশাপাশি নন্দীগ্রাম মামলা বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাস থেকে সরানোর আর্জি জানানো হলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তা অগ্রাহ্য করেছেন