বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করার সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে বিজেপি সাংসদদের সামনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া হয়। তাতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে মঞ্চে না উঠে নীচে বসে থাকেন এবং সেখান থেকেই বক্তব্য রাখেন। পরে এই নিয়ে সাফাই দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে বিজেপির অন্দরেই এই কাজ ঠিক হয়নি বলেও অনেকে সওয়াল করেন। আর এই নিয়ে বছরের প্রথম দিন তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন ভবনের ভিতপুজোয় মুখ খোলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে খোঁচা দেন তিনি। আর আজ, সোমবার ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণ করতে এসে পালটা জবাব দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
ঠিক কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে ঈশ্বর দেখে বিজেপি বলে খোঁচা দিয়েছেন অভিষেক। সেটার জবাবে মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ভূতে রামনাম ভয় পায়। তৃণমূল কী ভূত হয়ে গিয়েছে? কে কার মধ্যে ঈশ্বর দেখে জানি না। আমরা শুরু থেকেই রাম দেখি। ওরা বা কংগ্রেস বিপদে পড়লে রাম দেখে।’ এই ইস্যুতে বিজেপি সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়া দলের এমন কাজকে সমর্থন করেননি।
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি রাম নাম নিলে কমবে কিনা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন অভিষেক। এই বিষয়েও মুখ খোলেন মেদিনীপুরের সাংসদ। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি যার কোনও রাস্তা নেই, সে রামের নাম করে। রামকে ভয় পাওয়ার কী আছে? রামই তো উদ্ধার করেন।’ দিলীপ ঘোষের এই কথায় এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। হঠাৎ রামকে নিয়ে যেভাবে তিনি সওয়াল করতে শুরু করেছেন তাতে বাস্তবের সঙ্গে ফারাক রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর হাওড়া স্টেশনে উদ্বোধন হয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে পৌঁছতেই বিজেপি কর্মীরা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেন। যার জেরে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর অনুরোধ সত্ত্বেও আর মূল মঞ্চে ওঠেননি মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি কর্মীদের এমন আচরণের প্রতিবাদ করেন দলেরই সাংসদ সুভাষ সরকার। তিনি সকলকে শান্ত হওয়ার কথা বললেও শোনেনি কর্মীরা।
ঠিক কী বলেছিলেন অভিষেক? তিলজলায় তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন ভবনের ভিতপুজো সেরে অভিষেক বলেন, ‘সরকারি মঞ্চে যারা রাজনৈতিক স্লোগান ব্যবহার করে, তার মানেই ধরে নেওয়া যায় তারা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া। কোনও দল দেউলিয়া হয়ে গেলেই এধরনের আচরণ করে থাকে। ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারির পুনরাবৃত্তি ঘটল। এটা লজ্জার। কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে দেখেছেন তৃণমূল জিন্দাবাদ বলতে? বন্দেমাতরম, জয় হিন্দ, জয় বাংলা— বলুন। কিন্তু যারা মুখ থুবড়ে পড়েও শেখে না, মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করে, তাদের কী বলা হবে। ওরা হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে ঈশ্বরকে বা রামচন্দ্রকে দেখতে পেয়েছে। তাই জয় শ্রীরাম বলেছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’