বিজেপি’র নবান্ন অভিযানে বেঁধে গেল ধুন্ধুমার কাণ্ড। সাঁতরাগাছিতে বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশ রং মেশানো জল ছুড়েছে বলে অভিযাগ বিজেপি’র। আর তার জেরেই নাকি রক্তবমি করা শুরু করেন বিজেপি’র নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে ক্ষেপে ওঠে বিজেপি কর্মীরা। তারা সাঁতরাগাছিতে বিক্ষোভ দেখানোর নাম করে ব্যারিকেড ভেঙেছেন বলে অভিযোগ।
এদিকে হাওড়া ময়দান থেকে উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। এক বিজেপি কর্মীর কাছ থেকে সেটি উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অর্জুন সিং এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হেস্টিংস মোড়ে অবস্থান শুরু করল বিজেপি। তাতে যোগ দিলেন ভারতী ঘোষ এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়। হেস্টিংসে রাস্তা খালি করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ বলে অভিযোগ। তখন কিছুটা পিছিয়ে গিয়ে অবরোধ শুরু করে বিজেপি।
আবার নবান্নের দিকে যাওয়ার জন্য ব্রিজে ওঠার যে রাস্তা, সেই রাস্তার মুখেই আটকানো হয় বিজেপি নেতা কর্মীদের। রাকেশ সিং ও তাঁর দলবল ব্যারিকেডে উঠে পড়েন। তাঁদের উপর লাঠিচার্জ হয় বলে অভিযোগ। জলকামানও চালানো হয়। হেস্টিংসে বিজেপির মিছিলের নেতৃত্বে রয়েছেন স্বপন দাশগুপ্ত, রয়েছেন জয়প্রকাশ মজুমদার ও রাকেশ সিং। হেস্টিংস থেকে মিছিল শুরু হতেই তাদের আটকে দিল পুলিশ।
অন্যদিকে বাধা পেয়ে ঘুরপথেই নবান্নের উদ্দেশ্যে রওনা দেন বিজেপি নেতারা। তবে তাঁরা যাতে নবান্নের কাছে ঘেঁষতে না পারেন, তার জন্য পুলিশের প্রস্তুতি রয়েছে সর্বত্রই। নবান্নের চার পাশে ত্রিস্তরীয় বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। হাওড়া এবং কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যারিকেড গড়ে তোলা হচ্ছে। এসএসকেএম থেকে সাঁতরাগাছির দিকে বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ রয়েছে। হাওড়া ময়দান এবং সাঁতরাগাছির রাস্তা বন্ধ রেখে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। তার ফলে বিভিন্ন এলাকায় যানজট তৈরি হয়েছে। সাঁতরাগাছি ব্রিজের উপর এই মুহূর্তে ব্যাপক যানজট রয়েছে। মুরলিধর সেন লেনে বিজেপি’র সদর দফতর থেকে মিছিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছতে শুরু করেন। কর্মী সমর্থকরাও মিছিলের প্রস্তুতিতে অংশ নিয়েছেন। নিরাপত্তার কারণে প্রতিটি জায়গায় ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চলছে।
এই পরিস্থিতিতে অভিনেত্রী তথা বিজেপি’র রাজ্য সম্পাদিকা শর্বরীকে পুলিশ মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ তাঁর শাড়ি ছিঁড়ে দিয়েছে এবং তাঁর সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এই খবর পৌঁছতেই হাওড়া ব্রিজে ইটবৃষ্টি শুরু করে বিজেপি সমর্থকরা। এমনকী পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি হয় হাওড়া ময়দানে। সেখানে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমনকী হাওড়া ময়দানে বিক্ষোভ চলাকালীন বোমাবাজি করা হলে ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা।
এই গোটা প্রতিবাদ আন্দোলনে সামাজিক দূরত্ব শিকেয় উঠেছে। কেউ কিছু মানছে না। প্রশাসনের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাস্ক ছাড়াই নেতা–কর্মীদের তাণ্ডব দেখা যাচ্ছে। যদিও বিজেপি’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘সব কর্মী–সমর্থকরা মাস্ক পড়েছেন। নিয়ম কী শুধু আমাদের জন্য? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ আটকে দিতে চাইছে, আর আমাদের সামাজিক দূরত্ব শেখানো হচ্ছে। একই নিয়ম তাঁর জন্য প্রযোজ্য নয়?’