শান্তিপূর্ণ এবং অবাধ ভোটের জন্য রাজ্যে মোতায়েন করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু, তারপরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় জেলায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। শুধু নির্বাচনের দিনেই নয়, গণনার দিনেও বহু জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। এমনকী পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব মিটে যাওয়ার পরেও ভোট পরবর্তী হিংসা এখনও অব্যাহত রয়েছে বহু এলাকায় সেই আবহে রাজ্য থেকে এখনই কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়া ঠিক নয় বলেই মনে করছে বিজেপি। যেহেতু ভোট পরবর্তী হিংসা অব্যাহত রয়েছে সেই কারণে রাজ্যে আরও ১ মাস কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার আবেদন জানাল বিজেপি। তাদের বক্তব্য, রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে গেলে সমস্যা হবে। এখনও ভোট পরবর্তী চলছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে আরও এক মাস কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা যায় কিনা কেন্দ্রকে তা বিবেচনা করে দেখতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: এবার কেন্দ্রকে হিসেব দিয়ে চিঠি রাজ্যের, কেন্দ্রীয় বাহিনী বাবদ ৩৫০ কোটি খরচ চাইল
রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন বিজেপি নেত্রী তথা আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে এখনও সন্ত্রাস অব্যাহত রয়েছে। তাই কেন্দ্র বাহিনী রাখার প্রয়োজন রয়েছে। শুক্রবার তার সেই আবেদন সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই দিন ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ভোটের ফল প্রকাশের পরে প্রথম ১০ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে এই সময়ের বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখতে গেলে সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রের মতামত নিতে হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তাই বিজেপির করা আবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওইদিন কেন্দ্র সরকারকে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে অবস্থান জানাতে বলা হয়েছে। তারপরে এ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার আশঙ্কা করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই কারণেই আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, ভোটের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরেও ১০ দিন বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায় রাখতে হবে। গত ১১ জুলাই ভোট গণনা হয়েছিল। আজ একুশে জুলাই। সেই হিসেবে ১০ দিন পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। তবে ভোট পর্ব মিটে গেলেও রাজ্যে হিংসা অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। প্রায়ই খুনের অভিযোগ উঠছে। তাছাড়া বিরোধীদের বাড়িতে হামলা এবং মারধরের অভিযোগও উঠছে। এই প্রেক্ষাপটে আদালতের নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন বিরোধীরা।