উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এক ব্যক্তিকে মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠল রাজ্যের ৯ পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ওই পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। নির্দেশে হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ৬ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে না হলে এই তদন্তের ভার অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থা হাতে দেওয়া হবে।
এই ৯ পুলিশ কর্তার মধ্যে রয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের তৎকালীন পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও, বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার সঞ্জীব দে প্রমুখ। ওই পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ পেলেন হুগলির আরামবাগের পিন্টু মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক কারণে তাঁকে মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। মামলাকারীর আইনজীবীদের অভিযোগ, ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত পিন্টুর বিরুদ্ধে মাদক পাচার সহ বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছিল বিভিন্ন থানায়। যার মধ্যে নিউ টাউন, বিষ্ণুপুর প্রভৃতি থানায় ১০ টির বেশি মামলা দায়ের করা হয় পিন্টুর বিরুদ্ধে। ২০১৮ সালের মে মাসে তেলেঙ্গানা থেকে নিউটন থানার পুলিশ হানা দিয়ে পিন্টুকে গ্রেফতার করে। সেই সময় তিনি একটি বেসরকারি স্টুডিওতে শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসার পথেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার পারুলিয়া কোস্টাল থানায় তাঁর বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ জমা পড়ে।
মাস খানেক জেল কাটার পর আলিপুর আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হয়। পিন্টুকে বেকসুর খালাস করে আদালত। এরপরে কলকাতা হাইকোর্টে ওই সমস্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে মামলা করেন পিন্টু। জানা গিয়েছে, কয়লা পাচার এবং গরু পাচার মামলায় বহু তথ্য দিয়ে ইডি এবং সিবিএকে সাহায্য করেছিলেন পিন্টু। সেই কারণেই তাঁকে মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সিআইডি তদন্তের পাশাপাশি ওই অফিসারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনে অফিসারদের সাসপেন্ড করতে হবে বলেও জানিয়েছে আদালত। আগামী ৬ মাসের মধ্যেই এই পদক্ষেপ করতে হবে।
অন্যদিকে, হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হতে পারেন অফিসাররা। আগামীকাল সোমবার এই মামলার উল্লেখ করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, যে সমস্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মাদক মামলার ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁদের অনেকেই কয়লা পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে হাজিরা দিয়েছিল। এছাড়া একজন ইন্সপেক্টরকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল।