আগুন লেগে গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ওই গৃহবধূকে তার স্বামী পুড়িয়ে মেরেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, আগুনে যখন গৃহবধূর শরীর জ্বলছিল তখন তার স্বামী তাকে বাঁচানোর পরিবর্তে অন্য একজনকে ভিডিয়ো কল করে আগুনে পোড়ার দৃশ্য দেখিয়েছিল। সেই ঘটনায় খুনের অভিযোগ হওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। শেষে পুলিশের তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতায় হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশ মহকুমাশাসক স্ত্রীকে খুন করল স্বামী, হাড়হিম করা ঘটনার নেপথ্যে বড় গল্প
জানা গিয়েছে, এই ঘটনাটি হল আমহার্স্টস্ট্রিট থানা এলাকার। ওই গৃহবধূর নাম শালিনী মিত্র। গত ২৪ নভেম্বরের ঘটনা। পরিবারের অভিযোগ, তার স্বামী নীলাঞ্জন মিত্র তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। কারণ আগুন লাগানোর পর সেই দৃশ্য ভিডিয়ো কল করে শালিনীর দিদিকে দেখিয়েছিল নীলাঞ্জন। এরপর গৃহবধূর দিদি সেখানে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ৫ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়।
ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি অভিযুক্তের বিরুদ্ধেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট না হওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পরিবারের সদস্যরা। সে ক্ষেত্রে পুলিশের তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আদালত উল্লেখ করেছে, মৃত মহিলার স্বামী তার স্ত্রীকে সাহায্য করেননি। মনে হচ্ছে তিনি অন্তত এক মিনিট ধরে ভিডিয়ো কল করেছিলেন। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে স্বামী সত্যি সত্যি আগুন লাগিয়েছিল কিনা সে বিষয়টি সত্যি সত্যি খতিয়ে দেখা দরকার ছিল পুলিশের। তাছাড়া তদন্তকারী অফিসারের উচিত ছিল গৃহবধুর দিদির বয়ান রেকর্ড করা। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার অধীনে বয়ান রেকর্ড করা উচিত ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। তবে তা কেন করা হয়নি তা ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। পুলিশের তদন্ত ভুল ভাবে হয়েছে। এছাড়াও পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে আরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এরপরেই এই ঘটনায় তিনি সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন।