ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই সৌধের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে উনুন জালানো যাবে না বা কাঠ কয়লা দিয়ে আগুন জ্বালানো যাবে না। এনিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পরিবেশপ্রেমীদের দাবি ছিল। অবশেষে সেই দাবিতে সম্মতি দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ। এই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কলকাতা পুরসভাকে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ১২ বছর আগে সুপ্রিম নির্দেশ, এবার সাঁতরাগাছিতে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড সরানোর ভাবনা
ধর্মতলার বাস টার্মিনাস এবং অন্যান্য দূষণের কারণে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-সহ অন্যান্য হেরিটেজ সৌধের ক্ষতি হচ্ছে। এমনই দাবি ছিল পরিবেশ কর্মীদের। সেই দাবিতে ২০০৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। কলকাতা হাইকোর্ট সেইসময় বাস টার্মিনাস তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। পরে মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। দেশের শীর্ষ আদালতও ধর্মতলা থেকে বাস স্ট্যান্ড সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল। তবে ১২ বছর হয়ে যাওয়ার পরেও সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে পুনরায় মামলা দায়ের করেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। সেই সংক্রান্ত মামলায় আগেই বাস টার্মিনাস সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টে।
শুক্রবার সেই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট আগুন না জ্বালানোর বিষয়ে মৌখিক নির্দেশে জানিয়েছে ঐতিহাসিক এই স্মৃতি সৌধের ৩–৪ কিলোমিটারের মধ্যে কোনওভাবেই যেন উনুন জ্বালিয়ে রান্না করা না হয়। সে বিষয়টি পুরসভাকে নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি কোনও অস্থায়ী দোকান বা স্টলে যাতে দূষণ সৃষ্টিকারী কাজ না হয় তাও দেখতে বলেছে হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্ট লিখিত এদিন নির্দেশ দেয়নি। মৌখিকভাবে একথা জানিয়েছে। তবে আগামী দিনে পুরসভাকে এবিষয়ে লিখিত নির্দেশ দিতে পারে হাইকোর্ট।
এর পাশাপাশি যাতে ভিক্টোরিয়া চত্বরে যানবাহন সিগন্যালে বেশিক্ষণ দাড়াতে না পারে সেবিষয়ে মামলার শুনানিতে মামলাকারী সুভাষ দত্ত কলকাতা হাইকোর্টের কাছে আবেদন করেন। এছাড়াও তিনি ভিক্টোরিয়ার দিকে সবুজ বলয় বা গ্রিন করিডর করার আবেদন জানিয়েছেন। তাতে দূষণ কিছুটা হলে কমানো যায় বলে দাবি মামলকারীর। তাঁর যুক্তি, তাজমহলকে বাঁচাতে আশেপাশে যান চলাচলের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভিক্টোরিয়ার ক্ষেত্রেও সেটা করা উচিত।