বিবাহ বিচ্ছেদের একটি মামলায় এক মহিলা এবং তাঁর দুই কন্যা সন্তানের জন্য ৪ হাজার টাকা খোরপোষ দেওয়ার অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে নিম্ন আদালত।খোরপোষের এই পরিমাণ নিয়ে বিস্মিত কলকাতা হাইকোর্ট। বর্তমানে এই খোরপোষ যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল। নিম্ন আদালতকে এই সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট বিচারপতির মন্তব্য, ‘আধুনিক সমাজে মানুষ কতটা বর্বর হতে পারে!’
আরও পড়ুন: স্বামীকে তাঁর বাবা-মায়ের থেকে দূরে রাখা স্ত্রীয়ের নিষ্ঠুরতা, জানাল হাইকোর্ট
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে নির্যাতিতার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল এক ব্যক্তির। বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু, তারপর থেকেই তাঁর ওপর অত্যাচার শুরু করেন তাঁর স্বামী, ননদ এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যরা। এমনকী বাড়ির পরিচারিকাও তাঁর উপর নির্যাতন চালাতে শুরু করে। তাই অত্যাচার সইতে না পারে ২০১৭ সালে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যান ওই মহিলা। তার আগেই দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। পরে দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে যান। এর পরে খোরপোষের আবেদন জানিয়ে তিনি আলিপুর আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই সংক্রান্ত মামলায় আলিপুর আদালত ওই মহিলাকে মাসে ৪ হাজার টাকা করে অন্তর্বতী খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। যার মধ্যে মহিলার জন্য দু হাজার টাকা এবং এবং দুই সন্তানের জন্য ১০০০ টাকা করে ধার্য করা হয়েছে।
যদিও, এখনও চূড়ান্ত রায় দেয়নি আদালত। মহিলার স্বামী কী করেন তার ভিত্তিতেই এই খোরপোষদেওয়ার নির্দেশ আদালত দেবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে এই খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশ দেবে। তবে সেই নির্দেশে সন্তুষ্ট না হওয়ায় মহিলা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করার জন্য নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হলে সে ক্ষেত্রে মামলাকারীর সুবিধা হবে। তা না হলে বর্তমানে শুধুমাত্র ৪ হাজার টাকা খোরপোষে মহিলার পক্ষে সন্তানদের ঠিকমতো লালন পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁর বক্তব্য, বর্তমান বাজার মূল্যে এই টাকায় পেট চালানো একপ্রকার অসম্ভব। মহিলার আবেদনের ভিত্তিতে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করার জন্য নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।