কলকাতা হাইকোর্টে এসে বিপাকে পড়েন অনেক মানুষজনই। কারণ ইংরেজি ভাষায় আইনি সওয়াল–জবাবের জ্ঞান অনেকের থাকে না। আবার কোনও ব্যক্তি নিজে কিছু বলতে চান। কিন্তু তা পারেন না ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা না থাকার জন্য। এবার থেকে এই সব অসুবিধা কেটে যেতে চলেছে বলে খবর। ইংরেজি বুঝতে না পারার ফলে অনেক সমস্যার সন্মুখীন হতে হয় বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা মানুষজনের। সেই সব মানুষদের সুবিধার জন্য এবার কলকাতা হাইকোর্টে বাংলা ভাষাতেই শুনানি হবে। নিজের এজলাসে মাতৃভাষায় শুনানি চালু করবেন বলে জানিয়ে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এই খবর চাউর হতেই অনেকে লাফিয়ে উঠেছেন। কারণ যে অসুবিধার জন্য ভয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতেন না অনেকে সেটা আর রইল না। আজ, সোমবার মকর সংক্রান্তির দিন একটি মামলার শুনানিতে এই কথা জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ভরা এজলাসে বিচারপতি বলেন, ‘যাঁরা রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতে আসেন তাঁরা ইংরেজি ভাষা ভাল বুঝতে পারেন না। তাই এবার আমার এজলাসে মাতৃভাষা বাংলাতেই শুনানি হবে।’
এদিকে এক মুসলিম যুবক বোনের বিয়ের জন্য আড়াই লাখ টাকা জমান। ওই যুবক একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে আসেন। তখন তাঁর কাছ থেকে জনৈক আইনজীবী ভুল বুঝিয়ে মামলার ফাইলিং করার বাবদ এক লাখ টাকা নিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। আবার আদালতের নির্দেশের কপি নেওয়ার জন্যও বাড়তি এক লাখ টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সুতরাং বোনের বিয়ে দিতে বিপদে পড়ে যান ওই যুবক। পরে ওই যুবক বোঝেন তাঁকে টুপি পড়ানো হয়েছে। ইংরেজি জানে না বলে সুযোগ নিয়েছেন জনৈক আইনজীবী। তখনই তিনি বিষয়টি আদালতে বোঝান।
আরও পড়ুন: শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষায় বামেদের ভূমিকার তুলোধনা মলয়ের, দিলেন পরিসংখ্যান
অন্যদিকে এই ঘটনা শুনে বেজায় চটে যান বিচারপতি। তারপরই এই বিষয়ে একটি মামলার শুনানিতে এদিন এজলাসে আইনজীবী কল্লোল বসুর উদ্দেশে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘গরিব মানুষগুলির ভুলটা কী? তাঁরা ইংরেজি ভাষায় দক্ষ নয় বলেই পদে পদে হোঁচট খেতে হবে? কারও যদি ইংরেজিতে কথা বলতে অসুবিধা থাকে তাহলে আমি বাংলা ভাষাতেই শুনানি শুনব। বাংলা ভাষায় কথা বলাটা অত্যন্ত জরুরি। এখন থেকে আমার এজলাসে বাংলাতেও শুনানি হবে।’