দুর্গাপুজোর আগে আবার কলকাতায় মিছিল করতে চাইছেন শিক্ষক–শিক্ষিকারা। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি মিলছিল না। তাই নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে মিছিল করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। কিন্তু আজ, বৃহস্পতিবার সেই মামলায় বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত প্রশ্ন তুললেন, ‘কাজের দিনে ক্লাস না করে কীভাবে মিছিল করার কথা ভাবছেন শিক্ষক–শিক্ষিকারা?’ শিক্ষক সংগঠনকে আজ এমনই প্রশ্ন করল কলকাতা হাইকোর্ট। ক্লাসের সময়ে মিছিল করা ঠিক নয় বলেই পর্যবেক্ষণ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর।
এদিকে তিন হাজার শিক্ষক একসঙ্গে মিছিল করার আবেদন করেছেন কলকাতা হাইকোর্টে। বেতন বৃদ্ধি–সহ একাধিক দাবিতে মিছিল করতে চান তাঁরা। অথচ ব্যস্ত সময়ে মানুষের অসুবিধা যাতে না হয় তার জন্য অন্য কোনও রুট বেছে নেওযার কথাও বলেছে উচ্চ আদালত। রাজ্য এবং শিক্ষক সংগঠনকে বিকল্প রুট খুঁজে নিয়ে আসার কথা পর্যন্ত বলা হয়েছে। আগামী ১৩ অক্টোবর গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন তাঁদের নানা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আচার্য সদন থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মিছিল করতে চান। সেখানে সামিল হওয়ার কথা ছিল রাজ্যের প্রায় ৩ হাজার শিক্ষকের। কিন্তু এই মিছিল করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তাই পুলিশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শিক্ষক–শিক্ষিকারা।
ঠিক কী বলেছে আদালত? অন্যদিকে এই মিছিল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি হয়। আজ, বৃহস্পতিবার শুনানিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘শিক্ষকরা ক্লাস না নিয়ে কাজের দিনে কেমন করে মিছিলে অংশ নেবেন? আগে ক্লাস করিয়ে প্রয়োজনে পরে সাংগঠনিক বিষয়ে যোগ দেওয়া উচিত। অথবা ছুটির দিনে অংশ নেওয়া যুক্তিযুক্ত। তিন হাজার শিক্ষক এভাবে দিনের ব্যস্ত সময় শহরে মিছিল করলে সেটাতে অনুমতি দেওয়া যাবে না।’ আর রাজ্য সরকার পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান, দুর্গাপুজোর আগে এমন মিছিলে অনুমতি দিলে সাধারণ মানুষের সমস্যা হবে। তাই দুর্গাপুজোর পরে অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: নবম শ্রেণির ছাত্রকে পিষে দিয়ে চলে গেল স্কুলবাস, আবার বাংলায় মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা
তখন ঠিক কী বলেন বিচারপতি? তবে এই মিছিল বিকল্প কোন রুটে হবে সে ব্যাপারে শুক্রবার সিদ্ধান্ত নেবে কলকাতা হাইকোর্ট। সওয়াল–জবাব শুনে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘দুর্গাপুজো কোনও বিষয় নয়। মহালয়ায় আগেও এমন মিছিল করা যেতে পারে। প্রশ্ন হল, কেন এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষক জমায়েতের জন্য কাজের দিনকেই বেছে নিলেন? রাজ্য এবং আবেদনকারীরা বিকল্প কোনও ফাঁকা জায়গায় জমায়েতের প্রস্তাব নিয়ে আসুন। তখন বিবেচনা করে দেখা হবে।’ ক্লাস বন্ধ রেখে ধর্মঘট করা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।