১০০ দিনের কাজ, আবাস প্রকল্পে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বারবার টাকা আটকে রাখার অভিযোগ করেছে রাজ্য। সেই অবস্থাই স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ১৪,০০ কোটি বরাদ্দ টাকা ছাড়তে চলেছে কেন্দ্র। সাধারণত ৩-৪ দফায় এই টাকা দিয়ে থাকে কেন্দ্র সরকার। তার মধ্যে চলতি অর্থবর্ষে প্রথম কিস্তির টাকা ছাড়ার বার্তা দিয়েছে কেন্দ্র। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের আওতায় এই টাকা বরাদ্দ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘স্বাস্থ্যসাথী’ না-পসন্দ, WBHS চেয়ে একজোট বাংলার শিক্ষকরা
স্বাস্থ্য দফতর সুত্রের খবর, এই প্রকল্পে বছরে ২৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়ে থাকে। যার মধ্যে রাজ্য সরকার দিয়ে থাকে ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ১১২০ কোটি টাকা এবং কেন্দ্র সরকার দিয়ে থাকে ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ১৬৮০ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই ১৪০০ কোটি টাকা ছাড়া আর বার্তা দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের এই বরাদ্দ আটকে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তা আটকে গেলে প্রায় ২২ হাজার কর্মীর বেতন আটকে যেত। এছাড়া ৭ হাজার আশা কর্মীর উৎসাহ ভাতা আটকে যেত। ফলে এই প্রকল্পের কাজে ব্যহত হত। কেন্দ্রের তরফে এই প্রকল্পের প্রকৃত নাম ব্যবহার না করার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের বিরুদ্ধে। যেমন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় রাজ্যের সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। কেন্দ্রের নীতিতে এর নাম হল আয়ুষ্মান ভারত হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার। যদিও রাজ্যের তরফে জানানো হয়, কেন্দ্রের নীতিকে কোনওভাবে অমান্য করা হয়নি। এরপরে গত ২৩ এবং ২৪ মে রাজ্যের একাধিক প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ। এ ছাড়াও তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের পরেই চলতি অর্থবর্ষে প্রথম কিস্তির ২৮০ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয় কেন্দ্র সরকার।
এক স্বাস্থ্য অধিকারিক জানিয়েছেন, সাধারণত তিন দফায় এই টাকা দিয়ে থাকে কেন্দ্র সরকার। যদিও রাজ্য আগেই নিজের ২০০ কোটি টাকা এই প্রকল্পের কাজে লাগিয়েছে। এছাড়াও, এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং অন্যান্য খাতে বরাদ্দ আসছে বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যের ২২টি হাসপাতালে ক্রিটিকাল কেয়ার ব্লক তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সমস্ত সেই সমস্ত হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা এবং অস্ত্রোপচারের সুবিধা থাকবে। আবার করোনার জন্য এগুলিকে আলাদা ব্লক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। জেলাগুলিতে এগুলি তৈরির জন্য ৬০০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে এবং শহর অঞ্চলের প্রায় ৭০০টি হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার তৈরির জন্য ৫৫০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। অর্থাৎ সবমিলিয়ে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা ছাড়বে কেন্দ্র সরকার।
যদিও ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা, আবাস প্রকল্পের টাকা এখনও আটকে রয়েছে। রাজ্যের দাবি, কেন্দ্রের নির্দেশ মেনেই এই সব প্রকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। তারপরেও টাকা ছাড়ছে না কেন্দ্র।