চটকল শ্রমিকদের কথা ভেবে তাঁদের বেতন কাঠামো, পিএফ, গ্র্যাচ্যুইটি–সহ নানা বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। তার জন্য ত্রিপাক্ষিক বৈঠক পর্যন্ত হয়েছে। এই বিষয়গুলি নিশ্চিত হতেই খুশি চটকল শ্রমিকরা। এবার পাট শিল্পের সমস্যা মেটাতে বিশেষ পর্ষদ গঠন করবে কেন্দ্রীয় সরকার বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। কলকাতায় চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ, জুট বেলার্স, পাট চাষি–সহ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত একাধিক পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তারপর ‘বিশেষ পর্ষদ’ গড়ার কথা জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। আর এই বিশেষ পর্ষদের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছেন আইজেএমএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাজারিয়া।
এদিকে শনিবার পাট শিল্পের উন্নয়নে একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন শিল্প ও বাণিজ্য এবং বস্ত্রমন্ত্রী। পীযূষ গোয়েল জানান, চাষিরা পাটের সঠিক মূল্য যাতে পান, তার জন্য ডিজিটাল ব্যবস্থায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তার মান নির্ণয়ের ব্যবস্থা করা হবে। এখন ৪০% চটকলের আধুনিকীকরণের কাজ হয়েছে। বাকি চটকলেও তা দ্রুত করা হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘চটের বস্তা এবং পাট দিয়ে অন্যান্য পণ্য তৈরি করা খুব জরুরি। তার জন্য গবেষণায় জোর দিতে কারিগরি বস্ত্র শিল্পের গবেষণা এবং উন্নয়ন তহবিলের অর্থ ব্যবহার করতে হবে।’
অন্যদিকে প্রত্যেক বছরই বাধ্যতামূলকভাবে চটের বস্তা ব্যবহারের নীতি পর্যালোচনা হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের বরাতের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা থাকে। তবে এই চটশিল্পের উন্নয়নের জন্যই বারবার সওয়াল করেছিলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। তাঁর সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সম্পর্ক তলানিতে চলে গিয়েছিল। অবশেষে অর্জুন সিং বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে চলে আসেন। বহু চটকল মালিকদের ব্যাঙ্ক ঋণ পেতে অসুবিধা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও আইজেএমএ’র চেয়রাম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্ত বলেছেন, ‘সমস্যা মেটাতে দরকারে টানা পাঁচ বছর নীতি এক রাখার কথা ভাবা যেতে পারে। এটা জানিয়েছেন মন্ত্রী।’
আরও পড়ুন: ‘বন্ধু এবার খেলা হবে’ স্লোগানে তেতে উঠেছে ব্যারাকপুর জেল, আসলে কী ঘটেছে?
আর কী জানা যাচ্ছে? সামনে লোকসভা নির্বাচন। তাই চটকল শ্রমিকদের ভোট পেতে নানা কথা বলে গিয়েছেন পীযূষ গোয়েল বলে মনে করা হচ্ছে। শনিবার নিউটাউনে পাট পর্ষদ, জুট কমিশনার এবং জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার সদর দফতর পাটসন ভবনের উদ্বোধনও করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। মন্ত্রী বলেন, ‘৭০০ কিমি গ্রামীণ সড়ক তৈরি করতে পাট ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’ তবে বিশেষ পর্ষদ কতটা পাট চাষিদের উপকারে আসবে তা নিয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য দেননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।