একটি মেয়ে বাবার নিরাপত্তাতেই বড় হয়ে ওঠে। সন্তান বাবাকেই আঁকড়ে ধরে বড় হয়ে ওঠে। সেটাই কাম্য। কিন্তু, সেই জন্মদাতা বাবারই লালসার শিকার হল নাবালিকা মেয়ে। আর মেয়ের ওপর দিনের পর দিন চলতে থাকল বাবার যৌন নির্যাতন। এমনই জঘন্য অপরাধ করার দায়ে বাবাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত। আলিপুরের পকসো আদালতের জেলা ও দায়রা বিচারক উমেশ সিং এই নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানায়, 'বাবা হল বট গাছের মতো। মা না থাকলে সন্তানের দায়িত্ব থাকে বাবার উপর । কিন্তু সন্তানের প্রতি বাবার এরকম আচরণ মোটেই মেনে নেওয়া যায় না।'
বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি মাধবী ঘোষ জানান, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে বারুইপুর থানায় নাবালিকার বাবা তাপস চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। তাঁর স্ত্রী অর্থাৎ নাবালিকার মা এ নিয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, নিজের ১৫ বছরের মেয়ের উপরে যৌন নির্যাতন চালাচ্ছে তার বাবা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাপসকে গ্রেফতার করে বারুইপুর থানার পুলিশ। এরপরে আলিপুরের পকসো আদালতে বিচার পর্ব শুরু হয়।
গোটা বিচার পর্বে ১১ জনের সাক্ষী নেওয়া হয়েছে। যাবতীয় মেডিক্যাল রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মাধবী ঘোষ জানান, পরিবারের অর্থাভাবের কারণে পরিচারিকার কাজ করেন নাবালিকার মা। সেই সুযোগেই নাবালিকার ওপর যৌন নির্যাতন চালাত তাঁর বাবা। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হাওয়ায় স্টেট লিগ্যাল অথরিটিকে ৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে, অপরাধীর কাছে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে অতিরিক্ত ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে বিচারিক।