কলকাতার জেলা স্কুল পরিদর্শকের (ডিআই) একটি নির্দেশকে ঘিরে পোশাক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ডিআই একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, শিক্ষকরা জিন্স বা ইনফর্মাল কোনও পোশাক পড়ে স্কুলে আসতে পারবেন না। যদিও ১২ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেন ডিআই। তবে তাঁর এমন বার্তাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছেন শিক্ষকরা।
আরও পড়ুনঃ শাড়ি পরে স্কুলে আসতে হবে দিদিমণিদের, জিন্স, টি শার্ট নয়, বড় নির্দেশ ওই রাজ্যে
জানা গিয়েছে, রবিবার স্কুল শিক্ষা দফতরের বেশ কয়েকটি অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জেলা স্কুল পরিদর্শক বার্তা পাঠিয়ে প্রধান শিক্ষকদের দুটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রথমত, শিক্ষকদের নিয়মিত অ্যাটেনডেন্স নিতে হবে এবং কোনওভাবে শিক্ষকরা নির্দিষ্ট সময় পরে স্কুলে এলে তাদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। আর এরপরে যে দ্বিতীয় বার্তা পাঠিয়েছেন তা ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তাতেই পোশাক বিধির কথা বলা হয়েছে। অবশ্য ডিআই রাতের দিকে পোশাক বিধি নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা এড়িয়ে যেতে বলেন। তা সত্ত্বেও বিতর্ক থামেনি।
এ প্রসঙ্গে ডিআই সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, শিক্ষক শিক্ষিকাদের পোশাক পরুয়াদের মনে প্রভাব ফেলে। তাদের মধ্যে শিক্ষক শিক্ষিকাদের পোশাক নকল করার একটা প্রবণতা থাকে। ফলে শিক্ষকরা জিন্স বা ইনফর্মাল জাতীয় কোনও পোশাক পড়ে আসলে সেক্ষেত্রে পড়ুয়াদের মনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। সেই কারণে এমন বার্তা পাঠানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ডিআই।
তবে ডিআইয়ের এমন যুক্তি মানতে চাইছেন না শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, শিক্ষক-শিক্ষিকারা কি পড়াচ্ছেন তার ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করা উচিত, তারা কি পরছেন তার ভিত্তিতে নয়। তাঁদের বক্তব্য, জিন্স কোনও অশ্লীল পোশাক নয় বা অপসংস্কৃতির প্রতীক নয়। তাই ডিআইয়ের এই ধরনের নির্দেশিকাকে বিস্ময়কর বলে মনে হয়েছে শিক্ষকদের একাংশের।
এ বিষয়ে শিক্ষকদের একটি সংগঠন তীব্র বিরোধিতা করেছে। যদিও ডিআইয়ের এমন নির্দেশকে আবার স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। তবে জিন্স কি সত্যিই শিশুমনে কুপ্রভাব ফেলে? তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলি হল সেকেলে মনোভাব। প্রধান বিষয় হল শিক্ষকদের ব্যবহার এবং তারা কীভাবে পড়াচ্ছেন। সেটাই বিচার করা উচিত। প্রসঙ্গত, স্কুলে পোশাক বিতর্ক এই প্রথম নয়, এর আগে বিভিন্ন স্কুলে পোশাক বিধি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।