বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয় এবছরের উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল। ফল প্রকাশের সময়ই পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস বলেছিলেন, প্রথম স্থানাধিকারী একজন 'মুসলিম কন্যা'। যার পরেই বিতর্কের ঝড় বয়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। বিরোধী দলগুলি এই বিষয়টি নিয়ে তোপ দেগে বিভাজনের অভিযোগ তুলেছে। এবার সংসদ সভাপতির সমালোচনায় খোদ রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
প্রসঙ্গত উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছেন মুর্শিদাবাদের রুমানা সুলতানা। এই প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, 'ধর্ম আমার বিশ্বাস। ধর্ম আমার নিজস্ব। কিন্তু সমাজ ও দেশ আমার অস্তিত্ব। তাকে 'মুসলিম ছাত্রী' বলাটা আমি সমর্থন করি না। অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে।' তিনি আরও বলেন, 'মেধা দিয়ে সবপথ অতিক্রম করা যায়। ধর্ম দিয়ে তা করা যায় না। ওই ছাত্রী নিজের মেধার ভিত্তিতে সবার সেরা হয়েছে। মেধাতালিকায় কেউ প্রথম হলে সেটা ধর্মের জন্য নয়, তাঁর মেধার জন্য। আবার সেই এক ধর্মের মানুষের নাম তালিকার একেবারে শেষে রয়েছে বা কেউ ফেল করেছেন। এর সঙ্গেও ধর্মকে কখনও মেলানো যায় না।'
এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী নিজের উদাহরণ টেনে এনে বলেন, 'মেধা মেধাই হয়। পঁচিশ বছর ধরে আমি কাউন্সিলার থেকেছি। কর্পোরেশনটা আমি বুঝি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা জানেন। তাই আমি মেয়র হয়েছি। এর মধ্যে যদি কেউ ধর্ম টানেন, তাঁরা ভারতের সংবিধানকে অবমাননা করছেন।'
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে উচ্চমাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করেন পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের। আর সেখানেই ঘটে বিপত্তি। মহুয়া জানান, এবার উচ্চমাধ্যমিকে সর্বাধিক ৪৯৯ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছে 'মুসলিম কন্যা' রুমানা সুলতানা। মেয়েটি যে ইসলাম ধর্মাবলম্বী, একথা বেশ কয়েকবার উচ্চারণ করেন মহুয়া। তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। সমালোচনার মুখে পড়েন মহুয়া দাস। আর এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে তৃণমূলকে নিশানা করে বিজেপি। অমিত মালব্য টুইট করে বিষয়টিতে উষ্মা প্রকাশ করেন। যদিও মহুয়া দাবি করেছিসেন, পুরোটাই তিনি আবেগের বশে বলে ফেলেছেন। তবে তাতেও থামছে না বিতর্ক।